শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩ই আশ্বিন ১৪৩১
Smoking
 
তিন পেসার আর সাকিবের ঝলক
প্রকাশ: ০২:৩৭ pm ২১-০১-২০১৭ হালনাগাদ: ০২:৩৮ pm ২১-০১-২০১৭
 
 
 


তিন পেসার আগুন ঝরালেন দিনভরই। বিবর্ণ প্রথম স্পেলের পর মেহেদী হাসানও মিরাজও উজ্জল। বোলাদের এমন দিনেই কিনা প্রায় উধাও হয়ে ছিলেন সাকিব আল হাসান। শেষ বিকেলে হয়তো ভাবলেন, এবার কিছু না করলেই নয়!

ক্রাইস্টচার্চের আকাশের কান্না যখন শুরু; সাকিবের হাত ধরেও এল ছোটখাটো উইকেট বৃষ্টি। ৯ বলের মধ্যে ৩ উইকেট নিয়ে এলোমেলো করে দিলেন কিউই ব্যাটিং। বিকেল পর্যন্ত সমতায় থাকা দিনটি হয়ে গেল শুধুই বাংলাদেশের।

বৃষ্টির বেগ বাড়ায় থামল বাংলাদেশের ছন্দ। নিউ জিল্যান্ড তখন ৭ উইকেটে ২৬০। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস থেকে পিছিয়ে ২৯ রান। ১৯ ওভার আগে শেষ হয়েছে দিনের খেলা।

দিনটি বাংলাদেশের, সাক্ষী স্কোরকার্ড। তবে স্কোর তো আর সবসময়ই বলতে পারে না পুরোটা! এদিনও যেমন স্কোরকার্ডে লেখা নেই, ভালো দিনটি হতে পারতো অসাধারণ, যদি না পড়তো একের পর এক ক্যাচ। যদি না ভুল করতেন আম্পায়ারও। কে জানে, হয়ত বেশ একটা লিড নিয়ে দ্বিতীয় দিনেই বাংলাদেশ শুরু করতে পারত দ্বিতীয় ইনিংস।

সাকিব ঝলকের আগে দিনজুড়ে আলো ছড়িয়েছেন বাংলাদেশের তিন পেসার। এখানেও বোলিং ফিগার বলছে না পুরোটা। বলছে না বাংলাদেশের তিন পেসারই কতটা ভুগিয়েছেন কিউই ব্যাটসম্যানদের।

অসাধারণ প্রথম স্পেলে দিনের সুরটা বেঁধে দিয়েছিলেন তাসকিন আহমেদ। ৭ ওভারের প্রথম স্পেলে ২৫ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য। কিন্তু ভাগ্যকে একটু পাশে পেলে পেতে পারতেন গোটা দুই-তিন উইকেট।

আরেকপাশে আবার শুরু মিরাজের স্পিনে এবং যথারীতি ক্যাচ মিস। জিত রাভাল ২ রানে বেঁচে যান স্লিপে মাহমুদউল্লাহর হাতে। ১২ রানে বেঁচে যান আরও দুবার। একবার হতে পারতেন রান আউট। পরে স্লিপে সহজ ক্যাচ হাতছাড়া সাব্বিরের।

 

তাসকিনের দারুণ বোলিং দেখেও আরেকপাশে মিরাজকে চালিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তে প্রশ্ন তোলা যায়। কামরুল ইসলাম রাব্বি এসেই সেটি পুষিয়ে দিয়েছেন বটে, আবার প্রশ্নটিও উচ্চকিত করেছেন।

তিন বার বেঁচে গিয়েও রাভাল ফিরেছেন ১৬ রানে। কামরুল আগের ম্যাচে নিজের প্রথম বলেই নিয়েছিলেন উইকেট। এবার দ্বিতীয় বলে। এক বল বেশি লাগল বলেই কিনা, পুষিয়ে দিলেন জোড়া শিকারে। দ্বিতীয়টি আবার সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত শিকার। অফ স্টাম্পে পিচ করে বেরিয়ে যাওয়া নিখুঁত আউট সুইঙ্গারে বিদায় কেন উইলিয়ামসন।

১ রানে রস টেইলরকেও ফেরাতে পারতেন কামরুল। ক্যাচ ছেড়েছেন সেই মাহমুদউল্লাহ। রুবেল উইকেট না পেলেও বল করছিলেন দারুণ। ততক্ষণে থিতু হওয়া টম ল্যাথামকে নাড়িয়ে দেন বাউন্সারে বল হেলমেটের গ্রিলে লাগিয়ে।

ল্যাথাম ও টেইলর মিলে তবু কাটিয়ে দেন প্রথম সেশনের বাকিটা। দ্বিতীয় সেশনের শুরুতে একটু যেন কমলো বোলিংয়ের ধার। তাতে আলগা কিউইদের ফাঁস। তৃতীয় উইকেটে ল্যাথাম ও টেইলরের ১০৬ রানে জুটি।

উইকেট নেওয়ার মত অসংখ্য সুযোগ সৃষ্টি করেও না পাওয়া তাসকিন শেষ পর্যন্ত পেলেন আপাত নিরীহ এক বলে। অফ স্টাস্পের বাইরে কাট করতে গিয়ে একটু বাড়তি লাফানো বলে ৬৮ রানে আউট ল্যাথাম।

শুরুতে জীবন পাওয়া টেইলর আবার ৭৫ রানে বেঁচে যান মিরাজের বলে কামরুলকে ক্যাচ দিয়ে। তৃতীয় কিউই ব্যাটসম্যান হিসেবে পূর্ণ করেন ৬ হজার টেস্ট রান। তবে মার্টিন ক্রোর ১৭ সেঞ্চুরি ছোঁয়া হয়নি এদিনও। সেই মিরাজই ফিরিয়েছেন তাকে ৭৭ রানে।

থিতু দুই ব্যাটসম্যানকে হারানোর ধাক্কাও কিউইরা সামলে উঠেছিল হেনরি নিকোলস ও মিচেল স্যান্টনারের জুটিতে। বেশ কবার আউট হতে হতেও বেঁচে গিয়ে দুজন গড়েন ৭৫ রানের জুটি। মনে হচ্ছিলো ভালোভাবেই লিড নিয়ে নেবে নিউ জিল্যান্ড। তখনই দৃশ্যপটে সাকিব। আর তিনি নায়কের ভূমিকায় মানে রাজত্বও বাংলাদেশের!

প্রথম স্পেলে ৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে উইকেটশূন্য। দিন শেষে ৩২ রানে ৩ উইকেট! চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটাররা বুঝি এমনই। গোটা দিনটা নিজের করে নিতে লাগে মাত্র কয়েকটি মুহূর্ত!

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২৮৯

নিউ জিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৭১ ওভারে ২৬০/৭ (রাভাল ১৬, লাথাম ৬৮, উইলিয়ামসন ২, টেইলর ৭৭, নিকোলস ৫৬*, স্যান্টনার ২৯, ওয়াটলিং ১, ডি গ্র্যান্ডহোম ০, সাউদি ৪*; তাসকিন ১/৬৪, মিরাজ ১/৫১, রুবেল ০/৫৪, কামরুল ২/৪৮, সাকিব ৩/৩২, সৌম্য ০/১০)

 
 

আরও খবর

Daraz
 
 
 
 
 
 
 
 
©ambalanews24.com | Developed & Maintenance by AmbalaIT