শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩ই আশ্বিন ১৪৩১
Smoking
 
বাংলাদেশ–অস্ট্রেলিয়া সিরিজ
প্রথম দিনের হাসি বাংলাদেশেরই
প্রকাশ: ০৯:৫০ am ০৫-০৯-২০১৭ হালনাগাদ: ০৬:১৭ pm ০৫-০৯-২০১৭
 
 
 


সংক্ষিপ্ত স্কোর : বাংলাদেশ ১ম ইনিংস : ২৫৩/৬
কৌতুকের শুরুটা হল বাংলাদেশের শুরুর ব্যাটিং লাইনআপে পাঁচজন বাঁহাতি ব্যাটসম্যানকে দেখে। তামিম, সৌম্য, ইমরুল, মুমিনুল ও সাকিব-শুরুর এই পাঁচজন ব্যাটসম্যানই বাঁহাতি। অবাক হওয়ার মতো বিষয় হল, এই পাঁচজনের মধ্যে শুরুর চারজনের আউটের ভঙ্গিটা একেবারে হুবুহু একই রকম। চারজনই এলবিডব্লিউ। এবং চারজনই শিকার নাথান লায়নের স্পিনে। বাংলাদেশ ইনিংসের শুরুর এই পাঁচ ‘বামপন্থী’ দলকে বড় স্কোর এনে দিতে পারেননি। তবে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে মুশফিক ও সাব্বিরের সেঞ্চুরি পার্টনারশিপ দলকে সেই সঙ্কট থেকে তুলে আনে। এ দুজন আবার ডানহাতি। সেই সূত্রেই ‘ডানপন্থী’! প্রথম দিনের ম্যাচ পরিস্থিতির সঙ্গে প্রেস বক্সে ওঠা এই ‘ডান-বাম পন্থীময়’ কৌতুকটা বেশ মানিয়েও গেল বটে! ২৫৩ রানের বিনিময়ে ৬ উইকেট। চট্টগ্রাম টেস্টের স্কোর বোর্ডে প্রথম দিন শেষে এই রান ও উইকেটের হিসাবে তাহলে এগিয়ে থাকল কে? সিরিজ পরিস্থিতি। ম্যাচ পরিস্থিতি। উইকেট পরিস্থিতি। এবং বাংলাদেশ একাদশ-এসব বিষয়কে বিবেচনায় আনলে অবশ্যই প্রথম দিনের হাসিটা স্বাগতিক দলের। অস্ট্রেলিয়াও হাসছে। তবে সেই হাসিতে প্রাণের ছোঁয়া কই? কাষ্ঠ সেই হাসিতে দুশ্চিন্তার রেখাই বেশি! সারাদিনের বেশিরভাগ সময়ই অজি অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথকে মাথায় হাত রাখতে দেখা গেল। শেষ সেশনে সেই যন্ত্রণার উপস্থিতি আরেকটু বেশি পেলেন স্মিথ। মুশফিক-সাব্বিরের ১০৫ রানের জুটি যে এ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বড় কিছু করার স্বপ্নকে ফিকে করে দিচ্ছে! বড় কিছু? বড় কিছু মানে তো জয়। সিরিজ বাঁচাতে হলে এ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার জয় ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। আর সেই তাড়না থেকেই একাদশে বদলও আনে তারা। ঢাকা টেস্টে উভয় ইনিংসে ব্যর্থ উসমান খাজা বাদ পড়েন। তার জায়গায় খেলছেন অলরাউন্ডার হিলটন কার্টরাইট। ফাস্ট বোলিং করেন। তবে মূলত ব্যাটিংটাই একটু বেশি ভালো জানা। আর ইনজুরিতে পড়া পেস বোলার জশ হ্যাজেলউডের জায়গায় বাঁহাতি স্পিনার স্টিভ ও’কিফকে খেলায় অজিরা। লায়ন, অ্যাশটন অ্যাগার, ও’কিফ সঙ্গে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল-চার স্পিনার নিয়ে একাদশ সাজিয়েছে এবার অস্ট্রেলিয়া। তবে চট্টগ্রামে প্রথম দিন যে মিরপুরের সেই স্পিনসহায়ক আদি-অকৃত্রিম উইকেট যে মিলল না। স্পিনে তেমন বড় কোনো টার্ন নেই। আচম্বিক লাফিয়ে ওঠা বলের দেখাও মিলল না। দিনভর একটাই দৃশ্য দেখা গেল-কিছু বল নিচু হচ্ছে। বল দেরিতে ব্যাটে আসছে। টার্নের আশা থেকে পেছনের পায়ে খেলতে গিয়ে লাইন মিস-ব্যাটসম্যান হচ্ছেন এলবিডব্লিউ! তামিম, সৌম্য, ইমরুল ও মমিনুল-শুরুর চার ব্যাটসম্যানের আউটে এমন সমতার দেখা মিলল। প্যাট কামিন্সের ওপেনিং স্পেলেই ফিরতে পারতেন তামিম। কিন্তু ৬ রানে তামিমের সেই ক্যাচ থার্ড স্লিপে ফেলে দেন ম্যাক্সওয়েল। তবে অজিদের সেই ক্যাচ মিসের দুঃখটা বেশি সময় ধরে বইতে হয়নি। তামিমকে সিঙ্গেল ডিজিটে রেখেই ফেরান লায়ন। ইমরুল সোজা ও নিচু হয়ে আসা বলে স্লগ সুইপ করার চেষ্টা চালান। আম্পায়ার প্রথমে আউট দেননি। রিভিউতে জানা গেল ওটা পরিষ্কার এলবি। যে কোনো ব্রেকের শেষ সময়টা এলেই সৌম্য সরকার এলোমেলো হয়ে যান। এবারও তাই। লাঞ্চের ঠিক দুই বল বাকি থাকতে সৌম্য আউট। বল টার্ন করবে এ অপেক্ষায় থেকে পেছনের পায়ে খেলতে গিয়ে লাইন মিস-এলবি। ইনিংস গড়ে তোলার প্রাথমিক কাজটুকু প্রায় শেষ করে এনে মমিনুলও সেই একই ভুলের সঙ্গী। ৮৫ রানে শুরুর ৪ উইকেট হারানো তো ধসেই নমুনা। এ বিরতিতে সাকিবের উইকেটও হারায় বাংলাদেশ। অফ স্টাম্পের বাইরে পড়া অ্যাগারের বলটা সাকিব খেলবেন না ছাড়বেন-এ দোটানায় পড়ে ব্যাট বাড়িয়ে দেন। উইকেটের পেছনে ক্যাচটা নেন ম্যাথু ওয়েড। ১১৭ রানে ৫ উইকেটে থাকা বাংলাদেশ তখন ব্যাকফুটে। মুশফিক-সাব্বির জুটিতে যোগ হওয়া ১০৫ রান দলকে ফের ফ্রন্টফুটে নিয়ে আসে। সাব্বির যখন ব্যাটিংয়ে আসেন মুশফিক তখন ১৫ রানে খেলছেন। আক্রমণের সঙ্গে রক্ষণের মিশেল-এ পরিকল্পনায় সামনে বাড়েন দুজনে। মূলত আক্রমণের দায়িত্বটা বেশি নেন সাব্বির। মুশফিক অন্যপ্রান্তে ইস্পাতদৃঢ় ডিফেন্স গড়ে তোলেন। একেবারে নিখুঁত, প্রায় নির্ভুল ব্যাটিং। ৬২ বলে হাফসেঞ্চুরি পুরো করার পর সাব্বিরও বদলে ফেলেন নিজের খেলা। দিনের বাকি সময়টা কাটিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা মেলে তার ব্যাটিংয়ে। আর তাই পরের ১৬ রান করতে খেলেন ৫১ বল! তবে দ্বিতীয় নতুন বলে লায়নের প্রথম ওভারেই হাফপিচে পড়া বলে হাঁকাতে গিয়ে ভারসাম্য হারিয়ে বসেন। সামান্য সেই সুযোগে ওয়েড চোখের পলকেই স্টাম্পিং করেন। ক্যারিয়ারসেরা ইনিংসটা সেঞ্চুরিতেও শেষ হতে পারত-এ আফসোস নিয়ে ফেরেন সাব্বির। শেষ বিকেলে মুশফিক-নাসিরের হার না মানা ৩১ রানের জুটি জানাচ্ছে চট্টগ্রামের উইকেটে এখনও অনেক রান আছে। ম্যাচ এবং সিরিজ নিরাপদ করার বাংলাদেশের সেই দিন তো আজই?

 
 

আরও খবর

Daraz
 
 
 
 
 
 
 
 
©ambalanews24.com | Developed & Maintenance by AmbalaIT