প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “তার সরকার শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে চায়।” তিনি বলেন, “শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন আমরা নিশ্চিত করতে চাই। যাতে প্রত্যেক নারী অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী হয় এবং উন্নত জীবনযাপন করতে পারে। নিজের সংসার ও সমাজকে যেন গড়ে তুলতে পারে।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার সকালে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বেগম রোকেয়া দিবস ও রোকেয়া পদক ২০১৬ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “শতবর্ষ আগের সমাজ বাস্তবতায় বেগম রোকেয়া তখনই বুঝতে পারেন ‘নারীকে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েই মুক্তি অর্জন করতে হবে। শিক্ষাই হল সেই স্বনির্ভরতার সোপান।’ আমরা সবসময় এটাই বিশ্বাস করি যে, শিক্ষা ছাড়া প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয়। এজন্যই শিক্ষার প্রতি আমরা সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছি।”
প্রধানমন্ত্রী আগামীতে রোকেয়া পদক দুইজনের স্থলে পাঁচজনকে দেয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের উল্লেখ করে বলেন, “আগামীতে দুজন নয়, পাঁচজনকে রোকেয়া পদক প্রদান করা হবে।”
তিনি বলেন, “ইতোমধ্যেই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি- কারণ প্রতিবছর আমরা রোকেয়া পদক দিচ্ছি মাত্র দুজনকে। অথচ আমাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে আজকে মেয়েরা যথেষ্ট অবদান রাখছেন। তৃণমূল পর্যায় থেকে যারা অত্যন্ত সীমিত সুযোগ নিয়ে নারী শিক্ষায়, নারী জাগরণে, নারীর উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে আমরা তাদেরকেই পুরস্কৃত করতে চাই। একেবারে তৃণমূল পর্যায় থেকেই তাদেরকে খুঁজে আনতে চাই এবং পুরস্কারের এই সংখ্যাটি আমরা বাড়াতে চাই।”
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমা বেগম।
অনুষ্ঠানে নারী উন্নয়নে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আরোমা দত্ত এবং বেগম নুরজাহানকে ‘রোকেয়া পদক ২০১৬’ প্রদান করা হয়।
পুরস্কার হিসেবে দুই লাখ টাকার চেক, ১৮ ক্যারেট স্বর্ণের পদক ও সনদপত্র বিজয়ীদের হাতে তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
পুরস্কার প্রদানকালে দুই পদক বিজয়ীর জীবনী পড়ে শোনান মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমা বেগম।
প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে বলেন, “পুরস্কারটি আর কিছু নয়, এটি একটি উৎসাহ দেয়া বা প্রেরণা দেয়া, একটা সম্মান দেয়া। কাজেই আজকে যারা পুরস্কার পেয়েছেন তাদেরকে আমি সম্মান জানাচ্ছি এবং আমাদের নারী জাগরণে আপনারা আরো এগিয়ে আসবেন, সেটাই প্রত্যাশা।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “নারীর ক্ষমতায়ন কেবল শহর পর্যায় থেকে নয়, তৃণমূল থেকেই যেন হয় সেই পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি। এজন্য নারীদের বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আমরা করে যাচ্ছি। নারীদের কর্মক্ষেত্র সম্প্রসারণ করার এবং বিভিন্ন ধরনের কাজ যেন তারা করতে পারে, সেজন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি এবং তাদের বিভিন্ন ট্রেনিং দেয়া হচ্ছে। যেমন- মৎস্য চাষ, কৃষি, হাঁস ও মুরগী পালন, হাউজ কিপিং অ্যান্ড কেয়ার গিভিং, বিউটিফিকেশন, মাশরুম চাষ, রন্ধন প্রক্রিয়াকরণ ও বিপণন, বেসিক কম্পিউটার, আধুনিক গার্মেন্টস, মধুচাষ, লন্ড্রি, এমব্রয়ডারি, ড্রাইভিং, ছোট-ছোট যন্ত্রপাতি মেরামতকরণ বিষয়ে তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, “বেগম রোকেয়ার নিজের লেখা কাব্যগ্রন্থে নারীর মুক্তিতে তার দর্শনের পরিচয় পাওয়া যায়। জাগরণের কাজ ‘কঠিন সাধনার’ মন্তব্য করে তিনি লিখেছিলেন- ‘কোন ভাল কাজ অনায়াসে হয় না।”