শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪ ১৫ই আষাঢ় ১৪৩১
Smoking
 
মালয়েশিয়ার মুসলিম নারীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় হয়রানির শিকার হচ্ছেন
প্রকাশ: ০৩:২৮ pm ২৪-০৮-২০১৭ হালনাগাদ: ০৩:৩০ pm ২৪-০৮-২০১৭
 
 
 


মালয়েশিয়ার মুসলিম নারীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় হয়রানির শিকার হচ্ছেন, আর তা কতটা ব্যাপক তারই খোঁজ নিয়েছেন সুরেখা রাগাভান। বিশ্বের সবখানেই অনলাইনে যে মেয়েরা হয়রানির শিকার হয় তা গোপন কিছু নয়। মালয়েশিয়াতেও সব ধর্মের মেয়েরা হয়রানির শিকার হয়। চলতি বছরের শুরুর দিকে ১৫ বছর বয়সী মালয়েশিয়ার এক কিশোরী টুইটারে লিখেছিলেন, দেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হবার স্বপ্ন দেখেন তিনি। কিন্তু হিজাব পরা ছিলেন না বলে অনলাইনে ব্যাপক সমালোচনা ও বিদ্রূপের মুখে পড়তে হয় ওই কিশোরীকে। তবে মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, দেশটিতে মুসলিম নারীদের লক্ষ্য করে হয়রানি করা হচ্ছে এবং সামাজিক প্রত্যাশা থেকে এ হয়রানির শিকার হচ্ছেন বেশিরভাগ নারী। নারীদের অধিকার আদায়ে জড়িত মানবাধিকার কর্মী জুয়ানা জাফর বলেন, "আমরা একটা ট্রেন্ড দেখতে পাচ্ছি যে মুসলিম নারীদের (মালয়-মুসলিম) ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে টার্গেট করা হচ্ছে। বিশেষ করে তারা কিভাবে নিজেদের প্রকাশ করছে, তাদের পোশাক-আশাক কী, সেই বিষয়টা লক্ষ্য করছে।" ১৫ বছর বয়সী ওই কিশোরীর মামলাও তিনি লড়ছেন। জুয়ানা জাফর বলছেন, "ওই কিশোরীকে লক্ষ্য করে যেসব বক্তব্য এসেছে তা খুবই নির্মম। শেষ পর্যন্ত সে তার একাউন্ট মুছে ফেলতে বাধ্য হয়েছে এবং অফলাইনে থেকে সাহায্য চেয়েছে। আপনার যদি মালয়দের মতো নাম হয় তাহলে আপনাকে দৃশ্যমান দেখাবে।" অনেক রক্ষণশীল সমাজে কে কী করলো না করলো, প্রতিবেশীর কাজ বা ব্যবসা নিয়ে আলোচনা করার সংস্কৃতি রয়েছে। আর অনলাইনে এখন এটি ব্যাপকভাবে হচ্ছে। মালয় ভাষার যেসব ট্যাবলয়েড আছে সেখানে এসব 'পরচর্চার' বিষয়টি বেশ চলছে। জুয়ানা জাফর বলছেন, "ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে যখন দেখা হয় তখন এটি আরো বেশি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ইস্যু হয়ে দাড়ায়। ধর্ম কিন্তু এসব পরচর্চাকে উৎসাহ দেয় না। হাদিসেও আছে সবার প্রতি শ্রদ্ধা নিয়ে কথা বলো, কারো গোপন বিষয়ের প্রতিও শ্রদ্ধা রাখো।" ইউনিভার্সটি অব মালয় এর জেন্ডার স্টাডিসের প্রভাষক ড: আলিশিয়া ইজহারউদ্দিন বলেন, "বিশ্বব্যাপী এমনটা ঘটছে। তবে মালয়েশিয়ায় এটা যেন আলাদা একটা রূপে আসছে। ধর্মের বিষয়কে টেনে এনে খুবই নীচু মন মানসিকতার প্রকাশ ঘটাচ্ছে এখানকার মানুষ। সোশ্যাল মিডিয়া ঘৃণামূলক বক্তব্য ও সাইবার বুলিং নিয়ে মন্তব্য করার জন্য তা ভালো না মন্দ তা বিচার করার জন্য এখানকার মানুষ এখন নিজের পরিচয় গোপন রাখে।" মালয়েশিয়ায় সোশ্যাল মিডিয়ায় দিনে দিনে তরুণীদের উপস্থিতি বেড়েছে, বিশেষ করে টুইটারে এবং সেই সাথে অনলাইনে হয়রানির ঘটনাও বেড়েছে। নিয়মিত টুইটার ব্যবহার করেন মারিয়াম লি, তাঁর বয়স ২৫ বছর। সম্প্রতি তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হিজাব পরা ছেড়ে দেবেন। এই খবরটা টুইটারে শেয়ার করার পর তিনি এমন হয়রানির শিকার হয়েছেন, শারিরীকভাবেও তার নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে। তিনি বলেন, "এটা শুধু এমন না যে মানুষ আপনার দৃষ্টিভঙ্গি পছন্দ করছে না। আপনার শরীরে ত্রুটি খুঁজে বেড়াবে। আপনি যে মানুষ, আপনার যে ব্যক্তিত্ব, পুরোটার ওপরেই তারা শাসন করবে, ভয় দেখাবে।" বহুদিন ধরেই অনলাইনে হয়রানির শিকার হচ্ছেন তিনি। লি জানালেন, হয়রানি তীব্র হলো যখন প্রকাশ্যে তাকে নারীবাদী হিসেবে চিহ্নিত করা হলো। "আপনি যখন সমাজের কিছু বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন, আপনার মতামত জানাবেন। তখন তারা আরো বেশি নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে" বলেন তিনি।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

 
 

আরও খবর

Daraz
 
 
 
 
 
 
 
 
©ambalanews24.com | Developed & Maintenance by AmbalaIT