শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ২০শে আশ্বিন ১৪৩১
Smoking
 
সেলিম ওসমানের জামিন
প্রকাশ: ০৩:০৩ pm ২৩-০৫-২০১৭ হালনাগাদ: ০৩:১০ pm ২৩-০৫-২০১৭
 
 
 


শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে লাঞ্ছনা করার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্য এ কে এম সেলিম ওসমানের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।

মঙ্গলবার ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম জেসমিন আরা বেগমের আদালত ২০ হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন মঞ্জুর করেন। একইসঙ্গে আদালত আগামী ৪ জুলাই অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেছেন। ওই দিন আদালতে তাকে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন।

সেলিম ওসমানের পক্ষে জামিনের শুনানি করেন কাজী নজিবুল্লাহ হিরু। আর রাষ্ট্রপক্ষে সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পিপি আনোয়ারুল কবির বাবুল জামিনের বিরোধিতা করেন।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ২০ হাজার টাকা মুচলেকায় সেলিম ওসমানের জামিন মঞ্জুর করেন।

গত ১৪ মে আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিন আবেদন করেন সেলিম ওসমান। ওই দিন আদালত জামিন শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন। গত ২৯ মার্চ সেলিম ওসমানকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করা হয়। আনোয়ারুল কবির বাবুল এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

গত ২২ জানুয়ারি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে মামলাটি নারায়ণগঞ্জ আদালত থেকে ঢাকার সিজেএম আদালতে বিচারের জন্য বদলির নির্দেশ দেন।

এরপর গত ১ মার্চ নারায়ণগঞ্জের মুখ্য বিচারিক হাকিম (সিজেএম) আদালত থেকে ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম (সিজেএম) আদালতে মামলাটি স্থানান্তরিত হয়।

মোট ৬৫ পৃষ্ঠার মূল প্রতিবেদনের সঙ্গে সংযুক্তি হিসেবে আরো নথিপত্র আছে। তদন্তকালে ২৭ জনের জবানবন্দি নেওয়া হয়। বিচারক তদন্ত প্রতিবেদনে ছয়টি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। এগুলো হলো- প্রথম: শ্যামল কান্তি ওই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র মোহাম্মদ রিফাত হাসানকে ২০১৬ সালের ৮ মে মারধর করেছেন তা প্রমাণিত। দ্বিতীয় : ইসলাম ধর্ম ও আল্লাহকে নিয়ে শ্যামল কান্তির কটূক্তির সত্যতা পাওয়া যায়নি। তৃতীয় : ২০১৬ সালের ১৩ মে ওই স্কুলের পরিচালনা পর্ষদের সভা চলাকালে স্থানীয় শামসুল হকের ছেলে অপুর নেতৃত্বে ১০-১২ জন সভাকক্ষে ঢুকে প্রধান শিক্ষককে মারধর করার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবে অপু ছাড়া বাকি ১০-১২ জনের নাম কোনো সাক্ষীই প্রকাশ করেননি। চতুর্থ : ২০১৬ সালের ১৩ মে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভা চলাকালে আনুমানিক বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় মসজিদ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয় যে, ইসলাম ধর্ম ও আল্লাহকে নিয়ে কটূক্তি করেছেন শ্যামল কান্তি। কে বা কারা ওই ঘোষণা দিয়েছেন, তা নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। তবে বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কাজ নিয়ে কমিটির সদস্যদের মধ্যে বিরোধের কারণে এমন ঘোষণা দেওয়া হতে পারে বলে বিশ্বাস করার কারণ আছে। পঞ্চম : ২০১৬ সালের ১৩ মে বিকেল ৫টার দিকে সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান প্রধান শিক্ষকের রুমে ঢুকে তাকে চারটি থাপ্পড় দিয়েছেন- এ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। ষষ্ঠ : সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের নির্দেশে শ্যামল কান্তি ভক্ত কান ধরে উঠ-বস করতে বাধ্য হয়েছেন তা ভিডিও ফুটেজ দেখে প্রতীয়মান হয়েছে। তবে সাক্ষীদের সাক্ষ্য পর্যালোচনায় প্রতীয়মান হয়েছে যে- উপস্থিত জনগণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ওই নির্দেশ দেন।

২০১৬ সালের ১০ আগস্ট ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে নারায়ণগঞ্জের স্কুল শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় পুলিশ প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয়েছে, এ মন্তব্য করে পুরো ঘটনার বিচারিক তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে ইসলাম ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে ২০১৬ সালের ১৩ মে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে লাঞ্ছিত করার ঘটনাটি প্রকাশ পেলে দেশজুড়ে তীব্র নিন্দা-প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।

 
 

আরও খবর

Daraz
 
 
 
 
 
 
 
 
©ambalanews24.com | Developed & Maintenance by AmbalaIT