শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ২০শে আশ্বিন ১৪৩১
Smoking
 
হলি আর্টিজানে হামলাকারী ৫ জঙ্গির ফরেনসিক প্রতিবেদন প্রকাশ
প্রকাশ: ০৪:০০ pm ০১-০৭-২০১৭ হালনাগাদ: ০৪:০৫ pm ০১-০৭-২০১৭
 
 
 


হলি আর্টিজানে জঙ্গিদের গুলি ও বোমার আঘাতে মৃত্যু হয়েছিল বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের (ঢামেক) ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ড. সোহেল মাহমুদ। শনিবার (১ জুলাই) দুপুর দেড়টার দিকে পাঁচ জঙ্গি ও এক সন্দেহভাজনের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পুলিশের কাছে হস্তান্তর শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
এসময় সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘নিহত এই ছয় জনের প্রত্যেকের শরীরে গড়ে দুই থেকে তিনটি গুলির আঘাত পাওয়া গেছে। দু’জনের শরীরে ছিল বোমার আঘাত। এছাড়া, একজনের বাম হাত ও গালে বোমা বিস্ফোরণের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে এই চিহ্নগুলো আত্মঘাতী বোমার আঘাত থেকে নাকি পুলিশের ছোড়া বোমার আঘাত থেকে তৈরি হয়েছে, তা আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি।’

ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দিতে এক বছর সময় লাগার কারণ জানতে চাইলে ঢামেক ফরেনসিক বিভাগের প্রধান বলেন, ‘আমাদের কাছ থেকে এফবিআই ও ভারতের একটি সংস্থা কিছু নমুনা নিয়েছিল। আমরা সেগুলোর প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু তাদের প্রতিবেদন এখনও পাওয়া যায়নি। পরে গত বৃহস্পতিবার আমরা নিজেদের প্রতিবেদন সম্পন্ন করেছি। আজ (শনিবার) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের কর্মকর্তাদের কাছে তদন্ত প্রতিবেদনটি হস্তান্তর করেছি।

হামলার আগে জঙ্গিরা কোনও ধরনের নেশাজাতীয় দ্রব্য গ্রহণ করেছিল কিনা, এ প্রসঙ্গে সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘পাঁচ-ছয় জন মিলে এতগুলো মানুষকে হত্যা করছিল। এর আগে তারা কোনও ধরনের নেশাজাতীয় পদার্থ নিয়েছিল কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ ছিল। আমাদের কেমিক্যাল এক্সপার্ট রিপোর্টে এ ধরনের কোনও ড্রাগ বা উত্তজক পদার্থ নেওয়ার প্রমাণ মেলেনি।’

এর আগে চলতি বছরের ১৯ জুন হলি আর্টিজানে হামলায় নিহত ২০ জনের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। ওই নিহতদের শরীরে কী ধরনের আঘাতের চিহ্ন ছিল, জানতে চাইলে সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘তাদের শরীরে গুলির আঘাত ছিল, কোপানোর আঘাত ছিল; গলা কেটেও হত্যা করা হয়েছে কয়েকজনকে। কারও কারও বুক ও পেটে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে আঘাত করার চিহ্ন রয়েছে।’ নারীদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন বেশি ছিল বলে জানান তিনি।

যে পাঁচ জঙ্গির ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হস্তান্তর করা হয়েছে তারা হলো— নিবরাস ইসলাম, মীর সামেহ মুবাশ্বের, রুহান ইবনে ইমতিয়াজ, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম। এছাড়া, ওই হামলায় নিহত সন্দেহভাজন সাইফুল ইসলামের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনও দেওয়া হয়েছে। সাইফুল হলি আর্টিজানের শেফ হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালায় জঙ্গিরা। এতে নিহত হয় তিন বাংলাদেশি নাগরিকসহ ২০ জন। অন্যদের মধ্যে ৯ জন ইতালির, ৭ জন জাপানের এবং একজন ভারতীয়। এছাড়া জঙ্গিদের হামলার শুরুতেই দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন। রেস্তোরাঁর ভেতরে রাতভর জিম্মি ছিলেন অন্তত ২৪ জন, যাদের প্রায় ১১ ঘণ্টা পর পরদিন সকালে সেনা কমান্ডো পরিচালিত ‘অপারেশন থান্ডার বোল্টে’র সময় উদ্ধার করা হয়। এছাড়া রাতের বিভিন্ন সময় উদ্ধার করা হয় আরও অন্তত ৭ জনকে। অপারেশন থান্ডার বোল্টের পর রেস্তোরাঁ থেকে ৫ জঙ্গিসহ ৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া পালাতে গিয়ে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আরেক রেস্তোরাঁকর্মী। এ ঘটনায় গুলশান থানায় দায়ের হওয়া মামলাটি কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট তদন্ত করছে।

 
 

আরও খবর

Daraz
 
 
 
 
 
 
 
 
©ambalanews24.com | Developed & Maintenance by AmbalaIT