জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুর ইউনিয়নেরর শিবনগর গ্রামে সন্ধান পাওয়া জঙ্গি আস্তানায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অপারেশন ঈগল হান্ট শেষ হয়েছে। বাড়িটিতে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে জঙ্গি আবুসহ ৪ জন নিহত হয়েছেন। তবে বাকি তিনজনের পরিচয় এখনো জানা যায়নি।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে ঘটনাস্থলের পাশে একটি আমবাগানে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি খুরশীদ হোসেন।
তিনি বলেন, “বার বার অনুরোধ জানানো সত্বেও জঙ্গিনেতা আবু আত্মসমর্পণ করেনি, বরং বাড়ির ভেতর থেকে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ও গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। কাজেই বাধ্য হয়েই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে গুলি করতে হয়েছে।”
নিহতরা নিজেদের গ্রেনেড বিস্ফোরণে মারা গেছেন বলেও দাবি করেন ডিআইজি খুরশীদ। সেই সঙ্গে তিনি জঙ্গি আবুর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সুমাইয়া ও মেয়ে সাদিয়াকে জীবিত উদ্ধার করার ঘটনায় সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এটা পুলিশের জন্য একটি সফলতা।
তিনি আরও জানান, পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল ও সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট এখন ওই বাড়িতে পরবর্তী কার্যক্রম চালাবে।
এসময় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের উপকমিশনার মহিবুল ইসলাম, সোয়াটের উপকমিশনার প্রলয় কুমার জোয়ারদার ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বুধবার রাতে স্থগিত করা অভিযান বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শুরু করে পুলিশের বিশেষায়িত টিম সোয়াট ও এপিবিএন সদস্যরা। দিনভর থেমে থেমে চলে ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা। আশেপাশের এলাকার মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পরে ব্যাপক আতঙ্ক। দুপুর ১২টা ও ১টা দিকে বিকট শব্দে দুটি বিস্ফোরণের শব্দও শোনা যায়। এসময় বাড়ির উপরে দেখা যায় আগুনের ধোঁয়া। এরমধ্যেই পুলিশের পক্ষ থেকে হ্যান্ডমাইকের মাধ্যমে আত্বসমার্পনের জন্য জঙ্গিদের আহবান জানানো হয়।
বিকেল ৫টার দিকে ব্যাপক গোলাগুলির মধ্যে ঘিরে রাখা বাড়ি থেকে জঙ্গি আবুর স্ত্রী সুমাইয়া ও চার বছরের মেয়ে সাদিয়াকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে তাদের অ্যাম্বুলেন্সে করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেয়া হয়।
উল্লেখ্য, বুধবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে শিবনগরের ওই বাড়িটি জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে ফেলে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। এসময় ওই বাড়ি থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। এরই মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় শিবনগর ও এর আশেপাশের এলাকায় জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয় প্রতিবেশী বাড়িগুলোর লোকজনকে।
বিকেলে অভিযানে যোগ দেয় ঢাকা থেকে যাওয়া সোয়াট সদস্যরা। সন্ধ্যা পৌনে ৭টা থেকে রাত পৌনে ৯টা পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক গুলিবিনিময় হয় জঙ্গিদের। একপর্যায়ে কৌশলগত কারণ দেখিয়ে রাত ৯টার দিকে অভিযান সাময়িক বন্ধের ঘোষণা দেন সোয়াট কর্মকর্তা প্রলয় কুমার জোয়ারদার।