দেশ গড়ার সকল কাজেই আজ পুরুষের সহযোদ্ধা হিসেবে অবদান রাখছে নারীরা। দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সংস্কৃতি, বিচার, প্রশাসন, কূটনীতি, সশস্ত্র বাহিনী, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সর্বক্ষেত্রে নারীর সফল ও গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা এখন যথেষ্ট দৃশ্যমান।
সভ্যতার সূচনালগ্ন থেকে বিশ্বের সকল উন্নয়নের সমঅংশীদার হিসেবে পুরুষের পাশাপাশি নারীর অবদান অনস্বীকার্য। বাংলাদেশের নারীসমাজও একইভাবে বেগম রোকেয়ার দেখানো পথ ধরে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধসহ দেশ গঠনে অসামান্য ভূমিকা রেখে চলেছেন।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস আজ।এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘নারী-পুরুষের সমতায় উন্নয়নের যাত্রা, বদলে যাবে বিশ্ব, কর্মে নতুন মাত্রা’। জাতিসংঘ ১৯৭৫ সাল থেকে প্রতিবছর ৮ মার্চ তারিখে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করে আসছে। সমাজের সর্বস্তরে লিঙ্গ সমতা প্রতিষ্ঠার আহবানের মধ্য দিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও আজ যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত হচ্ছে।
দিবসটি উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁরা নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত, তাদের সমানাধিকার এবং সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সবাইকে একসাথে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন।
এ উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, ‘জাতীয় উন্নয়নের সর্বক্ষেত্রে সমঅংশীদারিত্ব নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশের সার্বিক চিত্র পরিবর্তন করা সম্ভব, যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেও সহায়ক হবে।’ নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের সমন্বিত প্রয়াসে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়াও সম্ভব বলে তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এ উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক নারীকে উন্নয়নের সক্রিয় অংশীদার করা হলে আমরা একটি সমতাভিত্তিক বিশ্ব গড়ে তুলতে সক্ষম হব।’
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নারী জাগরণের অগ্রদূতদের, যাদের আত্মত্যাগ ও নিষ্ঠায় নারীর সমঅধিকার এবং মর্যাদা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন সফল হয়েছে তাদের এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে সম্ভ্রম হারানো ২ লাখ মা-বোন যাঁদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি মহান স্বাধীনতা - প্রধানমন্ত্রী বাণীতে তাদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন ।
দিবসটি উপলক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গ্রহণ করেছে বিস্তারিত কর্মসূচি ।অন্যদিকে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক- সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো রাজধানীসহ দেশের অন্যান্য জায়গায় সমাবেশ, শোভাযাত্রা, সেমিনার, আলোচনাসভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেছে।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি আজ সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
এছাড়াও নারী দিবস উপলক্ষে ৯ মার্চ মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় কন্যা শিশু এডভোকেসি ফোরাম যৌথভাবে একটি র্যালির আয়োজন করেছে। শাহবাগের পাবলিক লাইব্রেরি থেকে শুরু হয়ে র্যালিটি ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে গিয়ে শেষ হবে।