আপনার জীবন কতটা আনন্দময় হবে তা নির্ভর করে আপনার শারীরিক সুস্থতার ওপর। সুস্থতা শব্দটি আপনার জন্য তখনই সহজ হবে যখন আপনি নিয়মিত জীবনযাপন করবেন। বাংলায় একটি প্রবাদ আছে, সু-স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। এই কথাটি আমরা কমবেশি সবাই জানি, কিন্তু কয়জন পারেন নিজেকে সুস্থ রাখতে? আদিকাল থেকে মানুষ সুস্থ থাকার জন্য কত কিছু করে আসছেন। কিন্তু কিছু কিছু মূল বিষয় আছে, যা মেনে চললে আমরা সহজেই সুস্থ থাকতে পারি। চলুন এমন কিছু সু-স্বাস্থ্য বটিকা নিয়ে আলোচনা করা যাক। ঘুম : প্রতিদিন আমাদের ন্যূনতম ছয় ঘণ্টা ঘুমানোর অভ্যাস করার প্রয়োজন। কারণ ছয় ঘণ্টা ঘুমানো একজন সাধারণ মানুষের শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য জরুরি। বেশি রাত করে না ঘুমিয়ে রাতের খাবারের দুই ঘণ্টা পর ঘুমিয়ে পড়ুন এবং ভোরে ঘুম থেকে ওঠার চেষ্টা করুন। প্রথমে একটু কষ্ট হলেও পরে এটাকে ধীরে ধীরে অভ্যাসে পরিণত করার চেষ্টা করুন। শারীরিক ব্যায়াম : প্রতিদিন কমপক্ষে আধাঘণ্টা শারীরিক ব্যায়াম করুন। আর ব্যায়াম করার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হচ্ছে সকাল বেলা। তবে বিশেষ কারণে প্রতিদিন সকালে শরীরচর্চা সম্ভব না হলে প্রতিদিন বিকেলে হাঁটার অভ্যাস করতে পারেন। আজকাল স্বাস্থ্যসচেতন অনেক নারী-পুরুষকে জিমে যেতে দেখা যায়। তবে জিমের যন্ত্রপাতি ব্যবহারে প্রশিক্ষকের পরামর্শ মেনে চলা উচিত। শারীরিক ব্যায়াম আপনাকে নিচের বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে সাহায্য করবে : ১। ভালোভাবে ঘুমাতে পারবেন। ২। সচল থাকবেন। ৩। মজবুত হাড় এবং শক্তিশালী পেশি গড়ে তুলতে পারবেন। ৪। ওজন ঠিক রাখতে অথবা ওজন সঠিক মাত্রায় নিয়ে আসতে পারবেন। ৫। বিষণ্নতা রোগের ঝুঁকি কমাতে পারবেন। ৬। অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি কমাতে পারবেন। খাবার : সকালের খাবারের তালিকায় রাখুন রুটি এবং সবজি। তবে সঙ্গে ফল থাকলেও সমস্যা নেই। শাক-সবজি ও ফলমূল বেশি পরিমাণে খাবেন। সব ধরনের ফাস্টফুড ও তৈলাক্ত খাবার থেকে বিরত থাকতে চেষ্টা করুন। কারণ এগুলো আপনার স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়াবে। শর্করা জাতীয় খাবার কখনও বেশি পরিমাণে না খাওয়া ভালো। সপ্তাহে দুই দিনের বেশি মাংস না খাওয়াটাই স্বাস্থ্যসম্মত। অনেকে কোমল পানীয় পান করতে খুব পছন্দ করেন। এতে প্রচুর ফ্যাট থাকে। তাই কোমল পানীয় বেশি খাওয়া উচিত নয়। খাবার পানি : পানির অপর নাম জীবন। আর তাই এ ব্যাপারে সচেতন হওয়া আমাদের একান্ত প্রয়োজন। লক্ষ রাখুন যাতে পানীয় জল ও খাবার বাসনপত্র ধোয়ার অথবা রান্না করার পানি নিরাপদ উত্স থেকে আসে। কোনো কারণে যদি জল দূষিত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তবে সেই পানি ব্যবহার করার আগে ফুটিয়ে নিন কিংবা ফিল্টার পদ্ধতির মাধ্যমে পানি পরিশোধন করে নিন। পানির ফিল্টারের ক্ষেত্রে গুণগত ও মানসম্পন্ন পানির ফিল্টার ব্যবহার করুন। ধূমপান পরিহার : উচ্চ রক্তচাপের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত না হলেও ধূমপান হূদরোগের জন্য একটি বড় ঝুঁকি। ধূমপান বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগের কারণ। এর মধ্যে ফুসফুসজনিত রোগ, মস্তিষ্কজনিত রোগ অন্যতম। তাই ধূমপান করা থেকে বিরত থাকুন। মনে রাখবেন, স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। আর সেই সুখটাকে ধরে রাখতে হলে অবশ্যই আপনার নিজের স্বাস্থ্যের যত্নের ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। আপনার স্বাস্থ্যের যত্ন আপনাকেই নিতে হবে। আপনার স্বাস্থ্য এমন বিষয়গুলো দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে যার ওপর আপনার হাত নেই। কিন্তু পরিস্থিতি যেমনই হোক না কেন উপরিউক্ত পরার্মশগুলোর মধ্যে কিছু পরামর্শ আপনি কাজে লাগিয়ে আপনি নিজেকে অনেকটাই সুস্থ রাখতে পারেন।