গর্ভকালীন রোজা রাখা না-রাখার বিষয়টি নারীদের শারীরিক অবস্থার ওপর অনেকটা নির্ভর করে। এমনিতে একজন অন্তঃসত্ত্বার দৈনিক ক্যালরি চাহিদা বাড়তি থাকে। আর সেটা ঠিকমতো পূরণ না হলে তাঁর নিজের যেমন নানা সমস্যা হতে পারে, তেমনি গর্ভস্থ শিশুরও বৃদ্ধি ব্যাহত হতে পারে। আবার এ সময় গর্ভবতী নারীর শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়, প্রস্রাবের সংক্রমণে ঝুঁকি বাড়ে, প্রস্রাবে কিটোন বডি চলে আসতে পারে। দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকলে বা পানি পান না করলে এসব ঝুঁকি বাড়ে। তাই সব দিক বিবেচনা করে চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করে তবেই একজন গর্ভবতী নারীর রোজা পালন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখা জরুরি:
* শরীরে পানিশূন্যতা এড়াতে সন্ধ্যার পর থেকে ভোর পর্যন্ত যথেষ্ট পরিমাণ পানি (অন্তত দুই লিটার) পান করতে হবে। লবণ ও খনিজ উপাদানের অভাব পূরণের জন্য পানির পাশাপাশি ডাবের পানি, লেবু-লবণ পানি, খাওয়ার স্যালাইন ইত্যাদিও গ্রহণ করতে হবে।
* ইফতারে অতিরিক্ত ভাজা-পোড়া খেলে পেটে গ্যাসের সমস্যা হতে পারে, বমিও হতে পারে। তাই সহজপাচ্য খাবার বেছে নিন। যেমন: শরবত, খেজুর, দুধ ও ফলমূল। চিড়া-দই, কাঁচা ছোলা ইত্যাদি পর্যাপ্ত শক্তি জোগাবে।
* দিনের বেলা পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন। ভারী পরিশ্রম করবেন না।
* সাহ্রি না খেয়ে রোজা করবেন না। সাহ্রিতে সব ধরনের উপাদানসমৃদ্ধ খাবার রাখুন।
* কোষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে পর্যাপ্ত পানি পান করবেন, আঁশযুক্ত খাবার, সবজি, ফলমূল খাবেন।
* গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কিডনি সমস্যা থাকলে অথবা ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভাবস্থায় রোজা পালনের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।
* দিনের বেলা হঠাৎ খুব দুর্বলতা, মাথা ঘোরা, প্রস্রাব হ্রাস বা প্রস্রাবের রং গাঢ় হওয়া, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, মাথাব্যথা, মাথা ঝিমঝিম, বমি ভাব, গর্ভস্থ শিশুর নড়াচড়া কম অনুভূত হওয়া বা পেটব্যথার মতো সমস্যা হলে রোজা পালন থেকে বিরত হয়ে চিনিযুক্ত পানি ও শরবত পান করুন।