রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Smoking
 
শাজনীন হত্যা মামলায় আসামি শহীদুলের মৃত্যুদণ্ড ফাঁসি কার্যকর
প্রকাশ: ০৯:২৮ am ৩০-১১-২০১৭ হালনাগাদ: ০৯:৩২ am ৩০-১১-২০১৭
 
 
 


বহুল আলোচিত শাজনীন তাসনিম রহমানকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শহীদুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ড ফাঁসির মাধ্যমে কার্যকর করা হয়েছে। বুধবার (২৯ নভেম্বর) রাত ৯.৪৫টায় গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসি কার্যকর করা হয়। কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এর আগে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেছিলেন শহীদুল। কিন্তু তা খারিজ হওয়ায় কারাবিধি অনুযায়ী আদালতের দেয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকর হলো। ১৯৯৮ সালের ২৩ এপ্রিল রাতে গুলশানে নিজ বাড়িতে খুন হন শাজনীন তাসনিম রহমান। তিনি ট্রান্সকম গ্রুপের কর্ণধার লতিফুর রহমানের মেয়ে। শাজনীন তখন স্কলাস্টিকা স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন। পরদিন শাজনীনের বাবা লতিফুর রহমান গুলশান থানায় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় একটি হত্যা মামলা করেন। একই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর ওই ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি ধর্ষণ ও হত্যা মামলা করে সিআইডি। তদন্ত শেষে প্রথম মামলায় ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত-১ এবং দ্বিতীয় মামলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। দুটি মামলাতেই আদালত অভিযোগ গঠন করেন। পরে দুটি মামলারই অভিযোগ গঠনের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেন আসামিরা। ১৯৯৯ সালের ৬ জুলাই বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুল করিম ও বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের (পরে প্রধান বিচারপতি) সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়ে বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজের আদালতে বিচারাধীন হত্যা মামলাটির কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। কারণ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে ইতোমধ্যে আসামিদের খুনে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে বিচারাধীন ধর্ষণ ও হত্যা মামলাটির কার্যক্রম চলবে। ওই রায়ে হাইকোর্ট বলেন, ধর্ষণ ও হত্যা দুটি পৃথক অপরাধ, একটি আরেকটি থেকে আলাদা। এরপর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল বিভাগে যান। ১৯৯৯ সালের ১১ নভেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মোস্তফা কামাল, বিচারপতি লতিফুর রহমান (পরে প্রধান বিচারপতি), বিচারপতি এ এম মাহমুদুর রহমান ও বিচারপতি মাহমুদুল আমিন চৌধুরীর (পরে প্রধান বিচারপতি) সমন্বয়ে গঠিত আপিল বিভাগের বেঞ্চ আসামিদের আপিল আবেদন খারিজ করে দেন। সর্বোচ্চ আদালত রায়ে বলেন, হাইকোর্ট সঠিকভাবেই নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে চলা মামলাটির কার্যক্রম চালানোর নির্দেশ দিয়ে অন্য মামলাটির কার্যক্রম স্থগিত রাখতে বলেছেন। এটা এমন একটি মামলা, যেখানে ধর্ষণের সময় হত্যাকাণ্ড ঘটেনি। বরং স্পষ্টত এখানে প্রথমে ধর্ষণ ও পরে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। ধর্ষণ ও হত্যা দুটি আলাদা অপরাধ এবং এ ক্ষেত্রে একই অপরাধে দুবার বিচার হওয়ার ঘটনা ঘটবে না। সর্বোচ্চ আদালত থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে মামলাটির বিচার চলতে থাকে। ২০০৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক কাজী রহমতউল্লাহ মামলাটির রায় ঘোষণা করেন। রায়ে শাজনীনকে ধর্ষণ ও খুনের পরিকল্পনা এবং সহযোগিতার দায়ে ৬ আসামিকে ফাঁসির আদেশ দেন আদালত। বিচারিক আদালতের রায়ের পর মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের (ডেথ রেফারেন্স) জন্য মামলাটি হাইকোর্টে যায়। একই সঙ্গে আসামিরাও আপিল করেন। ২০০৬ সালের ১০ জুলাই হাইকোর্ট পাঁচ আসামি হাসান, শহীদ, বাদল, মিনু ও পারভীনের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন। পরে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন (লিভ টু আপিল) করেন চার আসামি হাসান, বাদল, মিনু ও পারভীন। ২০০৯ সালের ২৬ এপ্রিল সাজাপ্রাপ্ত চার আসামির লিভ টু আপিল মঞ্জুর করেন আপিল বিভাগ। ফাঁসির আদেশ পাওয়া আরেক আসামি শহীদ জেল আপিল করেন। ১১ এপ্রিল ওই আপিল শুনানি শেষ হয়। ২০১৬ সালের ২ আগস্ট সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে ৫ সদস্যের আপিল বিভাগ শহিদুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে বাকি ৪ জনের খালাসের আদেশ দেন।

 
 

আরও খবর

Daraz
 
 
 
 
 
 
 
 
©ambalanews24.com | Developed & Maintenance by AmbalaIT