ভোটের বছরের শুরুতে দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার আগেই হয়রত শাহজালাল (র.) ও হযরত শাহ পরান (র.) এর মাজার জিয়ারত করতে সিলেটের পথে রওনা হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
সোমবার সকাল সোয়া ৯টায় গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’ থেকে খালেদার গাড়িবহর যাত্রা শুরু করে।
পাঁচ বছর পর সিলেটে এই সফরে খালেদা জিয়ার সঙ্গী হয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, বরকতউল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল।
জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার আগে বিএনপিনেত্রীর এই সফরে জনসভার মত কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি রাখা হয়নি। জিয়ারত শেষে রাতেই তার ঢাকা ফেরার কথা রয়েছে।
যাত্রা শুরুর আগে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, “সিলেট পৌঁছে বিকালে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া দুই মহান সুফী সাধকের মাজার জিয়ারত করবেন। তার এই সফর শুধুমাত্র জিয়ারতের উদ্দেশ্যে।”
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া রাজনৈতিক প্রচারে যাচ্ছেন না। এক বছর আগে নির্বাচনী প্রচারের কোনো সুযোগ নেই। যেখানে এখন পর্যন্ত লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সৃষ্টি করা হয়নি, সেখানে নির্বাচনী প্রচার কীভাবে হবে?”
আমীর খসরু অভিযোগ করেন, সব দলের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করা না করে ক্ষমতাসীন দল ও তাদের শরিকরা ‘এককভাবে’ নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছে।
গত ৩১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ১ ফেব্রুয়ারি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ সিলেটে গিয়ে মাজার জিয়ারত করে জনসভায় যোগ দেওয়ার মাধ্যমে প্রাকনির্বাচনী প্রচার শুরু করেন।
খালেদা জিয়া সর্বশেষ সিলেটে গিয়েছিলেন দশম সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৩ সালের ৪ অক্টোবর। সে সময় আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে ২০ দলীয় জোটের জনসভায় বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসন, যদিও ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ভোট বিএনপি বর্জন করে।
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া এতিমখানা দুর্নীতি মামলার রায়ে দোষী সাব্যস্ত হলে খালেদা জিয়ার যাবজ্জীবন সাজা হতে পারে। সেক্ষেত্রে তার আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হতে পারে।
এই পস্থিতিতে শনিবার ঢাকায় জাতীয় নির্বাহী কমিটির চার শতাধিক সদস্যের সঙ্গে সভা করেন খালেদা জিয়া। সেখানে তিনি নেতাকর্মীদের অভয় দেওয়ার পাশাপাশি ‘যে কোনো বিপদ মোকাবিলায়’ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
অন্যদিকে বৈঠকে উপস্থিত তৃণমূলের নেতারা বলেন, নির্বাচনের আগে ওই রায় খালেদা জিয়ার বিপক্ষে গেলে বিএনপিকে কর্মসূচি দিতেই হবে। তবে সেই আন্দোলনে কেন্দ্রীয় নেতাদেরও সক্রিয় করতে হবে।
নির্বাহী কমিটির সঙ্গে সভার পর রোববার রাতে দলের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।