বাংলাদেশ-ভারত ঘনিষ্ঠতার ‘নতুন পর্বের’ প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লিতে গিয়েছিলেন সাত বছর আগে। দীর্ঘ সাত বছর পর চারদিনের সরকারি সফরে প্রতিবেশি ভারত গেলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরের প্রথম দিনেই ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নয়াদিল্লিতে সাক্ষাৎ করেন সুষমা।
এর আগে শুক্রবার সকাল ১০টায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৭৭ আকাশ প্রদীপে সফর সঙ্গীদের নিয়ে রওনা হয়েছিলেন শেখ হাসিনা। ভারতের স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে দিল্লিতে অবতরণ করেন তিনি।
এ সময় প্রটোকল ভেঙে শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নেরন্দ্র মোদি। ২০১৪ সালে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত কেবল যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্রাউন প্রিন্স শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদকেই বিমানবন্দরে সশরীরে হাজির হয়ে অর্ভ্যথনা জানিয়েছেন মোদি। আজ তিনি উষ্ণ অভ্যর্থনা জানালেন শেখ হাসিনাকে।
শেখ হাসিনা দিল্লিতে পৌঁছানোর পর তাকে স্বাগত জানিয়ে দু’টি টুইট করেছেন মোদি। টুইটে দেুই দেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। চারদিনের দ্বিপাক্ষিক এই সফরে শেখ হাসিনা ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী ও দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা সোনিয়া গান্ধির সঙ্গেও বৈঠক করবেন।
শনিবার সকাল থেকেই ব্যস্ত সময় কাটাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুরুতে রাষ্ট্রপতি ভবনে তাকে আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা জানানো হবে। এ সময়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানাবেন। ভারতের তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গার্ড অব অনার দেবেন।
এরপর রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে মহাত্মা গান্ধি মেমোরিয়ালে যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানকার আনুষ্ঠানিকতা শেষে সকাল ১০টার দিকে আবারও রাষ্ট্রপতি ভবনে ফিরে আসবেন তিনি।
সেখানে কিছু সময় বিশ্রাম নিয়ে সাড়ে ৩টার দিকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে যেসব ভারতীয় সেনাসদস্য শহীদ হয়েছেন তাদের মরণোত্তর ‘মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা’ প্রদান করবেন প্রধনামন্ত্রী। পদকপ্রাপ্তদের মধ্যে সাতজনের নিকটাত্মীয়দের হাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা পদক’ এবং সম্মাননাপত্র তুলে দেবেন। এ অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উপস্থিত থাকবেন এবং বক্তৃতা দেবেন। প্রাথমিকভাবে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ এক হাজার ৬৬১ জনকে মরণোত্তর সম্মাননা দেয়া হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে যোগদানের পর আবারও রাষ্ট্রপতি ভবনে ফিরে আসবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর সন্ধ্যা ৬টার দিকে ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ হামিদ আনসারির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করতে তার বাসভবনে যাবেন। বৈঠক শেষে সাড়ে ৬টায় রাষ্ট্রপতি ভবনে ফিরে আসবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সূত্র: এএনআই