বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Smoking
 
জীবন ধারায় ইসলাম।
প্রকাশ: ১১:২৫ am ০৬-০৯-২০১৮ হালনাগাদ: ১২:৫৫ pm ০৬-০৯-২০১৮
 
 
 


 প্রশ্নঃ যে মিসকিনের কথা বলা হয়েছে, আসলে মিসকিন কারা?

উত্তরঃমিসকিন হচ্ছেন ওই ব্যক্তি, যার কাছে নেসাব পরিমাণ সম্পদ নেই। কিন্তু কিছু সম্পদ আছে, অভাব আছে। অভাবের কারণে তিনি মিসকিন হয়ে আছেন। ঘরের মধ্যে আবদ্ধ হয়ে আছেন, তিনি হচ্ছেন মিসকিন।

অভাব যার আছে, কিন্তু জাকাতের যে নেসাব রয়েছে, সেই নেসাব পরিমাণ সম্পদ নেই, তার চেয়ে কম আছে, তিনি হচ্ছেন মিসকিন।

প্রশ্নঃকবর জিয়ারতের সঠিক নিয়ম কোনটি? শুনেছিলাম যে, কবরস্থানে গিয়ে কোনো কোরআন তিলাওয়াত করা যায় না। এটা নিয়ে একটু বিভ্রান্তিতে আছি।

উত্তরঃকবর জিয়ারতের সঠিক নিয়ম হচ্ছে, রাসুল (সা.) কবরে যাওয়ার পরে কবরবাসীর জন্য একটি সালাম বা দোয়া রাসুল (সা.) শিক্ষা দিয়েছেন। সে দোয়াটি আসসলামু আলাইকুম এবং এখানে রাসুল (সা.) তারপর বলেছেন যে, কবরবাসীর জন্য আপনি দোয়া করবেন। কবরবাসীর জন্য আপনি যে কোনো ধরনের দোয়া করতে পারেন, আল্লাহ ওয়ার হামহুম ওয়া আফিহিম ওয়াফু আনহু এ ধরনের যত দোয়া রাসুল (সা.) শিক্ষা দিয়েছেন, সেগুলো যে কোনো ধরনের দোয়া করতে পারেন। আর যদি সে দোয়াগুলো মুখস্থ না থাকে আপনার জন্য জায়েজ আছে তাঁদের জন্য বাংলা ভাষাতেও দোয়া করতে পারেন। যেমন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁদের জান্নাত দান করুন, তাঁদের কবরের আজাব মাফ করে দেন।

মুখস্থ যে কোরআনের আয়াতগুলো জানা আছে, সেই আয়াত পড়ে কি দোয়া করতে পারবেন?

কোরআনের আয়াত তো দোয়া না। অনেকে হয়তো ফজিলত মনে করেন। কবরের সামনে কোরআনের আয়াত তিলাওয়াতের কোনো বিষয় এখানে নেই। তিলাওয়াত আসবে না, শুধু দোয়া আসবে সেখানে।

এরপর আপনি তাঁদের কল্যাণের জন্য দোয়া করতে পারেন, এর সঙ্গে আপনি নিজের জন্যও দোয়া করতে পারেন। তবে দোয়াটা পুরোটাই হতে হবে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে। দোয়া কিন্তু কবরবাসীর কাছে করলে সেটা শিরক হয়ে যাবে। 

প্রশ্নঃ যে নামাজের শেষ বৈঠকে বসি, সেখানে আমাদের ডান পা খাড়া থাকবে নাকি বিছানো থাকবে?

শেষ বৈঠকে পায়ের অবস্থান কী হবে, এ নিয়ে আলেমদের দুটি মত রয়েছে। আবু হানিফা (রা.) বলেন যে, ‘উভয় আবস্থাতেই পায়ের পাতার ওপর বসবেন।’ ইমাম মালেক (রা.) বলেন, ‘দুই রাকাত হোক বা চার রাকাত, সর্বঅবস্থায় পা একদিকে বের করে দিয়ে বসবেন।’ আর ইমাম শাফেয়ি (র.) বলেন, ‘যদি দুই রাকাতবিশিষ্ট সালাত হয়, অর্থাৎ যেখানে দ্বিতীয় রাকাতে সালাম আছে, সেখানে পা বিছিয়ে দিয়ে বসবেন, আর যেখানে দ্বিতীয় রাকাতে সালাম নেই, অর্থাৎ আবার উঠে যাবেন, সেখানে পায়ের পাতার ওপর বসবেন, পা বের করবেন না।’

হাদিস থেকে দেখা যায় রাসুল (সা.) সালাতের শেষ বৈঠকে, অর্থাৎ যে বৈঠকে সালাম ফিরিয়েছেন, ওই শেষ বৈঠকে তিনি পা বের করে দিয়ে নিতম্বের ওপর বসেছেন। আবার যে বৈঠকে তিনি সালাম ফেরান নাই, অর্থাৎ দ্বিতীয় রাকাতে, সেখানে তিনি বাঁ পা বিছিয়ে দিয়ে পায়ের ওপর বসেছেন।

তবে এ বিষয়ে আলেমরা বিভক্ত হয়েছেন। কেউ বলেছেন, রাসুল (সা.) শেষ জীবনে মোটা হয়ে গিয়েছিলেন, এ জন্য পা খাড়া করে বসতে কষ্ট হতো বলে তিনি পায়ের ওপর বসতেন। আর যে বৈঠকে তিনি অল্প সময়ের জন্য বসতেন, তখন তিনি পায়ের পাতার ওপর (পা খাড়া করে) বসতেন। রাসুলের (সা.) শারীরিক অবস্থার কারণে এটি একটি গ্রহণযোগ্য কারণ হতে পারে।

তবে যেহেতু সাহাবয়ে কেরাম রাসুল (সা.) সর্বশেষ যা করেছেন, সেটা গ্রহণ করতেন, সে হিসেবে সর্বশেষ যে আমল বর্ণিত হয়েছে, সেটা হচ্ছে চার রাকাত বা তিন রাকাত হলে, অর্থাৎ নামাজে দুটি বৈঠক থাকলে সর্বশেষ বৈঠকে পা বের করে দিয়ে নিতম্বের ওপর বসাটায় বেশিরভাগ আমল হয়েছে।

তবে এটা একটা সুন্নত পর্যায়ের আমল, তাই এ বিষয়ে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে যেন আরেকজনের গায়ের ওপর ভর না পড়ে। বিশেষ করে আপনি যখন জামাতে নামাজ আদায় করবেন, তখন পা বের করে দিলে পাশের মানুষের গায়ে লাগতে পারে। তাই একটি সুন্নত পালন করতে গিয়ে আরেকটি সমস্যা যেন সৃষ্টি না হয়, সেদিকে আপনি খেয়াল রাখবেন। 

 
 

আরও খবর

Daraz
 
 
 
 
 
 
 
 
©ambalanews24.com | Developed & Maintenance by AmbalaIT