প্রথমত, করণীয়র মধ্যে রয়েছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘রমজান মাসের রোজার পরে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ রোজা হচ্ছে মহররম মাসের রোজা।’
তাই মহররম মাসে বেশি বেশি রোজা রাখার ব্যাপারে আল্লাহর নবী (সা.) অধিক গুরুত্ব দিয়েছেন।
দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে, কোরআনে কারিমের মধ্যে আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘আরবি ১২ মসের মধ্যে চারটি মাসকে আল্লাহতায়ালা হারাম ঘোষণা করেছেন।’
এই হারামের দুইটি অর্থ আছে। একটি অর্থ হলো পবিত্র। তাই এই মাসের পবিত্রতা হচ্ছে, এই মাসে কোনো ধরনের অশ্লীল, খারাপ, নিকৃষ্ট, নিষিদ্ধ কাজ না করা।
আরেকটি অর্থ হচ্ছে নিষিদ্ধ। এই মাসে যুদ্ধ, বিগ্রহ, মানুষের সঙ্গে হানাহানি এবং মানুষকে হত্যা করা অন্যান্য মাসের চাইতে কঠিনভাবে নিষিদ্ধ। সুতরাং, এই দিক থেকে এই মাসের গুরুত্ব অনেক বেশি। এই মাসের যে পবিত্রতা আছে বা নির্দেশনা আছে সেটি রক্ষা করার চেষ্টা করব।
এ ছাড়া এই মাসের মধ্যে অতিরিক্ত আর একটি বিষয় করণীয় হচ্ছে, আশুরার রোজা রাখা। সম্ভব হলে আল্লাহর বান্দাগণ আশুরার ১০ তারিখে অর্থাৎ মহররম মাসের ১০ তারিখে রোজা রাখবেন। ১০ তারিখের এই রোজাটি ৯, ১০ বা ৯, ১০, ১১ বা ১০, ১১ বা শুধু ১০ তারিখেও পালন করতে পারেন।
যেই কাজগুলো বর্জনীয় সেগুলো হচ্ছে, এই মাসকে শোকের মাস ঘোষণা করে, এই মাসে তাহজিয়া করা, মাতম করা ইত্যাদি। কোনো মুসলমান ব্যক্তি এই কাজে লিপ্ত হয়, (নাউজুবিল্লাহ মিন জালেক) যা একদম হারাম।
তৃতীয় বিষয় হচ্ছে, মহররম মাসের ঘটনাকে আশুরার সঙ্গে সম্পৃক্ত করা, মহররমের ইবাদতকে কারবালার সঙ্গে সম্পৃক্ত করা ইসলামের ইতিহাসে গর্হিত কাজ, নিষিদ্ধ কাজ।
কারবালায় হোসাইনের মৃত্যুর ঘটনাটি ইসলামের ইতিহাসে অত্যন্ত নির্মম, কঠিন ও কলঙ্কিত ইতিহাস। এই ঘটনার সঙ্গে মহররমের ও আশুরার এবং আশুরার ইবাদতেরও কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এটি ৬১ হিজরির ১০ মহররম আল্লাহ তায়ালার ফয়সালা অনুযায়ী হয়েছে।
সেই ঘটনা থেকে আমরা ইসলামের শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি। কিন্তু এটিকে কেন্দ্র করে মহররম মাসকে শোকের মাস ঘোষণা করা বা মহররমের দিনকে শোকের দিন ঘোষণা করা এই কাজটি বর্জনীয়।
আরেকটি বর্জনীয় বিষয় হচ্ছে, মহররমকে কেন্দ্র করে দেখা যায় অনেকেই বুক-পিঠ চাপড়ায়, ক্ষতবিক্ষত করে, ‘হায় হোসেইন’ ‘হায় হোসেইন’ ধ্বনি উচ্চারণ করে। এর সঙ্গে ইসলামের সামান্যতম কোনো সম্পর্ক নেই।
বরং রাসুল বলেছেন, যে এই কাজটি করবে সে আমার দলভুক্ত হবে না। এই কাজগুলো ইসলামের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণরূপে গর্হিত।
বর্তমানে আরেকটি শিরক সম্পৃক্ত হয়েছে সেটি হলো, হোসেইনের (রা.) কবর নির্মাণ করা হয়। তাদের ধারণা হচ্ছে হোসেইনের রূহ ওই কবরে চলে আসে এবং সেই কবরে তারা সেজদাহ করে। এটি একেবারেই নির্জলা শিরকি কাজ। যদি কোনো বন্ধু এই কাজে লিপ্ত হয়ে থাকেন, তিনি কোনো ধরনের ঘোষণা ছাড়াই ইসলাম থেকে বের হয়ে যাবেন। তিনি নিজেকে মুসলিম দাবি করার আর সুযোগ পাবেন না।