অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় রাগ একটি স্বাভাবিক আবেগ হলেও এর প্রকাশ যদি অনিয়ন্ত্রিত বা অন্যের জন্য ক্ষতিকারক অথবা অপ্রীতিকর হয়, তখন এটি নিঃসন্দেহে অগ্রহণযোগ্য। রাগের কারণে সম্পর্কের বিচ্ছেদ, বড় ধরনের শারীরিক ক্ষতি, অঙ্গহানি বা এমনকি কারও মৃত্যুর খবরও উঠে আসে সংবাদমাধ্যমে। তবে রাগের কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কিন্তু ব্যক্তি নিজেই। দূরত্ব তৈরি হয় তার পারস্পরিক সম্পর্কে, কমে যায় এর গুণগত মান অথবা তার প্রতি অন্যদের সম্মানবোধ, আগ্রহ। বিষণ্নতা, হীনম্মন্যতা বা অপরাধবোধে আক্রান্ত হয় ব্যক্তি।
রেগে যাওয়ার কারনঃ
অন্যের প্রতি আক্রমণ মানুষের নিজের প্রতি ধ্বংসাত্মক প্রবৃত্তির এক রকম আত্মরক্ষামূলক আচরণ মাত্র। আলবার্ট বান্দুরার মতো মনোবিজ্ঞানীরা ধারণা করেন, ব্যক্তির অনিয়ন্ত্রিত রাগ মূলত তিনি পরিবেশ থেকেই শেখেন। তার মতে, ব্যক্তি তার আগ্রাসীভাবের কারণে চারপাশের মানুষের কাছ থেকে কোনো না কোনোভাবে উপকৃত হয় (তার ইচ্ছা পূরণ হওয়া, অন্যদের ওপর নিয়ন্ত্রণ, অপরের ‘সমীহ’ ইত্যাদি)। অনেক সময় অন্যের আগ্রাসনও যখন পরিবার ও সমাজ কর্তৃক নানাভাবে উৎসাহিত হতে দেখে, সেটাও তাকে উৎসাহিত করে।
১)উদ্বিগ্ন বা বিষণ্নতা
২)কাজ ও সময়ের চাপ
৩)পারিবারিক পরিবেশ
রাগ সামলানোর উপায়ঃ
#সিদ্ধান্ত নিন: রাগ যে আপনার একটি নেতিবাচক আবেগ, যার কারণে আপনার ও অন্যদের যে ক্ষতি হচ্ছে, সেটি আগে নির্দিষ্ট করুন, পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিন।
তাত্ক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখানো থেকে বিরত থাকুন: রেগে গেলে সঙ্গে সঙ্গে এর প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে নিজের কাছে কিছু সময় নিন। দেখবেন এই সময়ক্ষেপণের ফলে আপনার উত্তেজনা বা রাগের তীব্রতা কমে গেছে। ফলে রাগত অবস্থায় আপনি যেমন ধংসাত্মক প্রতিক্রিয়া দেখাতেন, রাগ কমে যাওয়ার পরে আপনি অনেক সঠিকভাবে আপনার মনোভাব অন্যের কাছে পৌঁছাতে পারবেন।
#পরিস্থিতি থেকে সরে আসুনযখন বুঝে যাচ্ছেন আপনি রেগে যাচ্ছেন, তখন একেবারে প্রাথমিক অবস্থাতেই সেই পরিস্থিতি বা জায়গা দ্রুত ত্যাগ করুন বা কারও সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে রাগ হতে থাকলে প্রসঙ্গ পরিবর্তন করে ফেলুন অথবা তার সঙ্গে সেই মুহূর্তে কথা বলা থেকে বিরত থাকুন। এ সময় কিছু ‘রিলাক্সেসন এক্সারসাইজ’, যেমন শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম, গুনগুন করে গান গাওয়া, মজার কিছু ভাবা, মনে মনে নিজেকে শান্ত হতে বলা ইত্যাদি আপনার অস্থিরতা কমাতে সাহায্য করবে।
#রাগ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা বাড়ান নিয়ম করে দিনে অন্তত আধা ঘণ্টা জোরে ঘাম ঝরিয়ে হাঁটা বা যেকোনো ব্যায়াম, প্রতিদিন এক থেকে দুবার শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম আপনার আত্মনিয়ন্ত্রণ বাড়াবে। মানসিকভাবে আপনাকে ভালো রাখতে সাহায্য করবে।