একীভূত কোম্পানি হিসেবে রবির বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হলো। রবি ও এয়ারটেল একীভূতকরণের পর একীভূত কোম্পানিটি রবি আজিয়াটা লিমিটেড নামে পরিচালিত হবে।
রবি ব্র্যান্ডের পাশাপাশি রবি আজিয়াটার একটি স্বাধীন ব্র্যান্ড হিসেবে থাকবে ‘এয়ারটেল’।
একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শেষে রবির সিংহভাগ অর্থাৎ ৬৮ দশমিক ৭ শতাংশ শেয়ারের মালিকানায় রয়েছে আজিয়াটা। ভারতীয় এয়ারটেলের ২৫ শতাংশ এবং বাকি ৬ দশমিক ৩ শতাংশের মালিক জাপানের এনটিটি ডোকোমো।
রবির পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বুধবার (১৬ নভেম্বর) থেকে দেশের টেলিযোগাযোগ খাতের প্রথম একীভূতকরণ কার্যকর হলো। একীভূত কোম্পানিটি রবি আজিয়াটা লিমিটেড নামে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করবে। একীভূতকরণ শেষে বর্তমানে অপারেটরটির মোট গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩ কোটি ২২ লাখে। রবি ও এয়ারটেল একীভূত হওয়ার ফলে দেশজুড়ে কোম্পানিটির সবচেয়ে বিস্তৃত নেটওয়ার্কের পাশাপাশি মোবাইল ইন্টারনেট সেবায় আরো শক্তিশালী অবস্থান তৈরি হয়েছে। এতে রবি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলো।
রবির ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, এয়ারটেলের সঙ্গে একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শেষ করতে পেরে আমরা আনন্দিত। প্রক্রিয়াটি সফলভাবে শেষ হওয়ার জন্য আমরা আমাদের শেয়ারহোল্ডার, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন এবং রবি ও এয়ারটেলের গ্রাহকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় একীভূতকরণ প্রক্রিয়াটি সফলভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের বিশ্বাস এই একীভূতকরণের ফলে দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ বাজারে স্থিতিশীলতা এবং সুষ্ঠু ব্যবসায়িক পরিবেশ আরো দৃঢ় হবে। দ্রুততার সঙ্গে মোবাইল ব্রডব্যান্ড সেবার বিস্তৃতির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা সম্ভব হবে। একীভূত কোম্পানি হিসেবে আমাদের যৌথ প্রচেষ্টা থাকবে, আমাদের ৩ কোটি ২২ লাখ গ্রাহককে সাশ্রয়ী মূল্যে আকর্ষণীয় এবং উদ্ভাবনী মোবাইল ও ব্রডব্যান্ড সেবা প্রদান করা।’
গত ৫ বছরে রবি সবচেয়ে বেশি সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) এনেছে বলে ইতোমধ্যে স্বীকৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিআইডিএ)। একীভূতকরণের ফলে সামনের দিনগুলোতে আমাদের শেয়ারহোল্ডারা আরো বিনিয়োগে উৎসাহিত হবেন- বলে মন্তব্য তার।
আজিয়াটার প্রেসিডেন্ট এবং গ্রুপ চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার তান শ্রি জামালুদিন ইবরাহিম বলেন, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও কম্বোডিয়ার মতো বাজারে আমাদের কৌশলগত একীভূতকরণের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ বাজারের প্রথম একীভূতকরণ প্রক্রিয়াটি সফলভাবে শেষ করতে সহায়ক হয়েছে।
তিনি বলেন, নিজেদের অবস্থানকে সুসংহত করার পাশাপাশি- দক্ষতা বৃদ্ধি, বাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে মুনাফার সম্ভাবনা তৈরি করা এবং দীর্ঘমেয়াদে প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে গ্রাহক ও গণমানুষের জন্য মানসম্মত সেবা প্রদানের লক্ষে আজিয়াটা অভ্যন্তরীণ একীভূতকরণের দিকে নজর দিয়েছে।
তিনি বলেন, একটি প্রতিশ্রুতিশীল বিনিয়োগকারী হিসেবে বাংলাদেশে দুই দশকের বেশি সময় ধরে অবস্থান করছে আজিয়াটা। রবি দেশের উন্নয়ন বিশেষত ডিজিটাল বৈষম্য কমানো এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকল্প বাস্তবায়নে যে ভূমিকা রাখছে, তার প্রতি আজিয়াটার অকুণ্ঠ সমর্থন রয়েছে। আমাদের বিশ্বাস, এই একীভূতকরণ বাংলাদশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং এতে টেলিযোগাযোগ শিল্পেই নয়, সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের ব্যবসায়িক ও বিনিয়োগ পরিস্থিতিরও উন্নয়ন ঘটাবে।
বাংলাদেশে একীভূত হয়ে ব্যবসা পরিচালনার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের লক্ষে ২০১৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর উভয়পক্ষের আলোচনা শুরুর ঘোষণার মধ্য দিয়ে একীভূতকরণের যে প্রক্রিয়াটি শুরু হয়, বুধবার তা শেষ হলো।