প্রতিশ্রুতি দেওয়া সময়ের মধ্যে পণ্য সরবরাহে ব্যর্থ হওয়ায় ই-কমার্স পোর্টাল চালডাল.কমকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এক গ্রাহক চালডাল.কমের বিরুদ্ধে প্রতারণা এবং ভোগান্তির শিকার হওয়ার অভিযোগ করলে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর এই জরিমানা করে।
এদিকে নিয়মানুযায়ী অভিযোগকারী পাচ্ছেন জরিমানের ২৫ ভাগ, ১২ হাজার ৫০০ টাকা। শুনানীর দিন অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির কাছে নগদ টাকা না থাকায় আগামীকাল সোমবার তা পরিশোধ করা হবে বলে জানা গেছে।
অভিযোগকারী চালডাল.কম থেকে কয়েকটি পণ্যের সাথে জার্মান পারমিজান চিজ অর্ডার করেছিলাম। নিয়ম এবং প্রক্রিয়া মোতাবেক ক্রয়কৃত পণ্যের মোট মূল্যের সাথে চিজের ৬৪৫ টাকাও আন্তর্জাতিক পেমেন্ট সিস্টেম পেপ্যালের মাধ্যমে তৎক্ষণাৎ পরিশোধও করেন। পেপ্যালের মূল্য পরিশোধ যাচাইয়ের ভিত্তিতে চালডাল কর্তৃপক্ষ ক্রয়কৃত সব পণ্য নির্ধারিত ঠিকানায় একই দিন বিকেল সাড়ে ৩টা হতে ৫ টার মধ্যে সরবরাহ করবে বলে নিশ্চিত করে। কিন্তু তাদের দেয়া সময়সীমার দেড় ঘণ্টা পর তারা পণ্যগুলো সরবরাহ করে। যেখান থেকে তার ক্রয় করা অন্যান্য পণ্যের মধ্যে জার্মান পারমিজান চিজটি তিনি বুঝে পাইনি।
তিনি আরও বলেন, বুঝে না পাওয়া পণ্যটির পরিশোধিত মূল্য সম্পর্কে চালডালকে টেলিফোন করে জানতে চাইলে তারা সেটা পরেরদিন আবার সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দেয়। পরের দিন সন্ধ্যা রাত পর্যন্ত কোন ডেলিভারি না পেয়ে তাদের সাথে আবারও যোগাযোগ করা হলে পণ্যটি তাদের কাছে নেই বিধায় ডেলিভারি দেয়া সম্ভব নয় বলে আমাকে জানায়।
তিনি বলেন, তারা জানায় পণ্যটি তাদের কাছে নেই বিধায় ডেলিভারি দেয়া সম্ভব না। অথচ কেনার সময় তাদের ওয়েবসাইটে পণ্যটির ক্ষেত্রে ‘সরবরাহ নেই’ বা এমন অর্থবোধক কিছু উল্লেখ ছিল না, বরং ‘সরবরাহ আছে’ প্রদর্শন করেছিল। যা দেখে আমার কাছে মনে হয়েছে তারা আমাকে প্রতারিত করেছে এবং এটি ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ এর অধ্যায় চার এর ৪৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বেআইনি এবং একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। একই ধারাবাহিকতায় ক্রয়কৃত পণ্যটি চালডাল.কম কর্তৃক নিশ্চয়তা এবং প্রতিশ্রুতি মোতাবেক ডেলিভারি না করায় আমাকে যে প্রতারণা এবং ভোগান্তির শিকার হতে হয়, সেটিও একই আইনের ৪৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বেআইনি এবং আরও একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এইসবকিছু উল্লেখ করে তিনি জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ করলে, তারা একটি শুনানীর দিন ধার্য্য করে এবং ধার্য্যকৃত দিনে শুনানী করে। শুনানীতে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানটিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে।
প্রসঙ্গত, ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ এর অধ্যায় চার এর ৪৪ অনুচ্ছেদে বলা আছে, কোন ব্যক্তি কোন পণ্য বা সেবা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে অসত্য বা মিথ্যা বিজ্ঞাপন দ্বারা ক্রেতা সাধারণকে প্রতারিত করলে তিনি অনূর্ধ্ব এক বৎসর কারাদণ্ড, বা অনধিক দুই লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।
আইনের ৪৫ অনুচ্ছেদে বলা আছে কোন ব্যক্তি প্রদত্ত মূল্যের বিনিময়ে প্রতিশ্রুত পণ্য বা সেবা যথাযথভাবে বিক্রয় বা সরবরাহ না করলে তিনি অনূর্ধ্ব এক বৎসর কারাদণ্ড, বা অনধিক পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।