জামআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সাবেক প্রধান মওলানা সাইদুর রহমান ওরফে জাফরসহ তিনজনকে ৭ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার পর ঢাকার ৬ নম্বর বিশেষ জজ ইমরুল কায়েসের আদালতে এ মামলার রায় ঘোষণা হয়।
আসামিদের বিরুদ্ধে সন্ত্র্রাসবিরোধী আইনের ৮ ও ৯ ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে উল্লেখ করে, ৮ ধারায় ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাস কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন আদালত। ৯ ধারায় তাদের প্রত্যেককে ৭ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও আরও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তাদের এই দণ্ড পর্যায়ক্রমে কার্যকর হবে বলে আদালত উল্লেখ করেছেন। রায় ঘোষণাকালে আদালত বলেন, যে ধারায় মামলা হয়েছে তার সর্বোচ্চ শাস্তিই আসামিদের দেওয়া হয়েছে।
আসামি পক্ষে রাষ্ট্রের নিয়োগ করা আইনজীবী শাহনাজ সাথি বলেন। আজ (২৫ মে) আসামির কারাগারে ৭ বছর পার হয়ে গেল। ফলে তাকে আগামী ৬ মাস দণ্ড খাটতে হবে।
রায় শুনে আসামি সাইদুর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, আমি কখনোই এর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম না, আমি নির্দোষ। আমার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ অস্বীকার করি। এধরনের কাজ আমি কখনোই করিনি। এর আগে তাকে দুপুরের পর আদালতে নিয়ে আসা হয়। সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় বিচারের আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও এ মামলায় তা না হওয়ায় বিচার মাঝপথে আটকে যায়।২০১৫ সালের ৮ সেপ্টেম্বর অনুমোদনের জন্য নথিপত্র পাঠানো হয় মন্ত্রণালয়ে। গতবছর ২৬ অগাস্ট অনুমোদন পাওয়া গেলে নতুন করে শুরু হয় এ মামলার কার্যক্রম। গত এপ্রিল মাসে নতুন করে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষের ১৫ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হলে গত ৮ মে সাইদুর আত্মপক্ষ সমর্থন করেন। গত ১৮ মে দুই পক্ষের যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে বিচারক রায়ের জন্য ২৫ মে দিন রাখেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মনজুর মাওলা চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, পাঁচ বছর আগের এ মামলায় নতুন করে সাক্ষ্য শুরু হওয়ার পর দুই মাসের মধ্যে এ রায় হতে যাচ্ছে। মামলার অপর দুই আসামি আবদুল্লাহ হেল কাফী এবং তার স্ত্রী আয়শা আক্তার পলাতক রয়েছেন।
২০১০ সালের ২৫ মে ঢাকার দনিয়ার একটি বাড়ি থেকে সাইদুরসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। সে সময় তাদের কাছে উগ্র মতবাদের বই ও সরকারবিরোধী প্রকাশনার কাগজপত্র পাওয়া যায় বলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তরফ থেকে বলা হয়। পরে তার স্ত্রী হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে আত্মগোপনে যান।
অভিযোগ আছে, ২০০৭ সালে শায়খ আবদুর রহমানসহ জেএমবির শীর্ষ নেতাদের ফাঁসির পর হবিগঞ্জের সাবেক জামায়াত নেতা মওলানা সাইদুর রহমানের নেতৃত্বে পুনর্গঠিত হয় নিষিদ্ধ এ জঙ্গি সংগঠন।