শ্রমিকনেতা আমিনুল ইসলাম হত্যা মামলায় একজনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন টাঙ্গাইলের বিশেষ জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
রোববার বেলা ১১টায় আদালতের বিচারক মো. ওয়াহিদুজ্জামান শিকদার এই রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মোস্তাফিজুর রহমান বর্তমানে পলাতক।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন মুলতান উদ্দিন আহমেদ। আসামিপক্ষের রাষ্ট্র কর্তৃক নিয়োজিত আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা।
শ্রমিকনেতা আমিনুল গাজীপুর জেলার হিজলহাটি গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিন আকন্দের ছেলে। তিনি বাংলাদেশ সেন্টার ফর ওয়ার্কার্স সলিডারিটির (বিসিডব্লিউএস) সংগঠক ও বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের নেতা ছিলেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত মোস্তাফিজুর রহমান (২৩) মাগুরা জেলার কাদিরপাড়া (পূর্বপাড়া) এলাকার শমসের কারিগরের ছেলে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১২ সালের ৪ এপ্রিল আশুলিয়া থেকে নিখোঁজ হন আমিনুল। নিখোঁজের একদিন পর ৫ এপ্রিল সকালে টাঙ্গাইল- ময়মনসিংহ মহাসড়কের ঘাটাইল উপজেলার ব্রাহ্মণশাসন এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। প্রথমে লাশটির কোনো পরিচয় না পেয়ে থানা ও আঞ্জুমানে মফিদুল কর্তৃপক্ষ সেটি বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে ৬ এপ্রিল টাঙ্গাইল গোরস্থানে দাফন করা হয়। পরে জানা যায়, মৃত ব্যক্তি সাভার-আশুলিয়ার গার্মেন্টস শ্রমিক নেতা আমিনুল ইসলামের। তাকে হত্যা করে সেখানে ফেলে রেখে যায় অজ্ঞাতরা। পরে পরিচয় পাওয়ার পর আত্মীয়-স্বজনরা ৭ এপ্রিল তার লাশ উত্তোলন করে আমিনুল ইসলামের গ্রামের বাড়ি গাজীপুর জেলার হিজলহাটি গ্রামে নিয়ে দাফন করেন।
আমিনুলের লাশ উদ্ধারের পর ঘাটাইল থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) শাহীন মিয়া অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। পরে আমিনুলের ভাই রফিকুল ইসলাম এ ঘটনায় মোস্তাফিজুর রহমান ও বোরকা পরিহিত অজ্ঞাতনামা এক নারীকে আসামি করে ঘাটাইল থানায় আরেকটি এজাহার করেন।
এতে বলা হয়, ২০১২ সালের ৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় আমিনুলের আশুলিয়ার সংগঠনের কার্যালয়ে যান মোস্তাফিজুর। সঙ্গে ছিলেন ওই নারী। তারা আমিনুলকে ডেকে নেওয়ার পর থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন। এজাহারটি পুলিশের করা হত্যা মামলার সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়। মামলাটি প্রথমে ঘাটাইল থানার পুলিশ তদন্ত করে। পরে তদন্ত করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
পরে ২০১২ সালের নভেম্বর মাসে মামলাটির তদন্তভার সিআইডিতে স্থানান্তরিত হয়। এক বছর তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার ফজলুল কবীর মামলার অভিযোগপত্র টাঙ্গাইল জেলা আদালতে জমা দেন।