রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Smoking
 
ধানের শীষে ভোট চাইলেন খালেদা
প্রকাশ: ১০:০০ pm ১৪-০৬-২০১৭ হালনাগাদ: ১০:১২ am ১৫-০৬-২০১৭
 
 
 


নির্দলীয় সরকারের দাবিতে গত নির্বাচন বর্জন করলেও একাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য ধানের শীষে ভোট চাইলেন খালেদা জিয়া।

বুধবার এক ইফতার মাহফিলে তিনি বলেন, “ঢাকা সিটি, আপনারা আরও ঐক্যবদ্ধ হোন। আমি বলব- আসুন সামনে আসছে শুভ দিন, ধানের শীষেরই হবে বিজয় ইনশাল্লাহ।

“ধানের শীষকে আমরা ভোট দিয়ে বিজয়ী করি, এদেশের মানুষকে আবার শান্তি-উন্নতি-গণতন্ত্র-উন্নয়নের পথে নিয়ে যাবে।”

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাম্প্রতিক বিভিন্ন জেলা সফরে দলীয় প্রতীক নৌকায় ভোট চান।

তবে ‘সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক’ ভোটের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসা বিএনপি নেতৃত্ব নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে বক্তব্য-বিবৃতি দিয়ে আসছে। শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু ভোট হবে না দাবি করে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের প্রস্তাব দিয়েছে তারা।

এদিনই প্রথম কোনো সভায় দলীয় প্রতীকে ভোট চাইলেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

আগামী নির্বাচন ‘একতরফা’ হতে দেওয়া হবে না হুঁশিয়ারি দিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, “আওয়ামী লীগ নির্বাচনকে সবচেয়ে বেশি ভয় পায়। তারা ভাবছে, আগামী নির্বাচনেও তারা চুরি করে ক্ষমতায় বসবে। না, তাদের এবার আর চুরি করে ক্ষমতায় বসতে জনগণ দেবে না।

“আওয়ামী লীগ চাইবে বিএনপির নেতা-কর্মীদের এরকম মামলা-হামলা ও হয়রানি করে একতরফা নির্বাচন করবে। আমি বলতে চাই, আওয়ামী লীগকে এবার একতরফা নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না। একতরফা নির্বাচন এদেশে আর হবে না। সেটা কারও কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।”

এবারের নির্বাচন সবার অংশগ্রহণে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “হাসিনা এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে, কিন্তু ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করাতে পারবে না। হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। মানুষ বুঝে গেছে, হাসিনা ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করলে ফলাফল কী হয়।

“নির্বাচন হবে সহায়ক সরকারের অধীনে, সেখানে সকল রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করবে। ইনশাল্লাহ এই লুটেরা, খুনি, চোর, জনগণের হত্যাকারী, মা-বোনদের নির্যাতনকারী, ছাত্র-ছাত্রীদের অত্যাচারকারী এই সরকারকে জনগণ নির্বাচনে কেমনভাবে প্রত্যাখান করে, তাদের পরিণতি কী হয়, সেদিন তারা নিজেরা দেখে নিতে পারবে।”

নির্বাচন সামনে রেখে ঢাকা মহানগরে সংগঠন শক্তিশালী করতে নতুন কমিটির নেতাদের তাগিদ দেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

পার্বত্য জেলায় পাহাড় ধসে চার সেনা সদস্যসহ শতাধিক মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় শোক প্রকাশ করে আহতদের সুচিকিৎসার দাবি জানান তিনি।

দেশে গরিব মানুষ ‘দুর্দশায়’ থাকলেও সরকার তা সমাধানে ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন খালেদা জিয়া।

“তাদের সময় ফুরিয়ে এসেছে, তারা বুঝে গেছে। সেজন্য এখন তারা লুটপাট করে সেগুলো পাচার করতে ব্যস্ত। তাদের যে সেক্রেটারি জেনারেল সে বলে দিয়েছে, যত পারো লুটেপুটে নিয়ে চলে যাওয়ার ব্যবস্থা করো। সেজন্য তারা লুটপাট করছে।”

নরসিংদী ছাত্রদলের নেতা সিদ্দিকুর রহমান নাহিদের ছবি দেখিয়ে তাকে গুম করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি নেত্রী।

তিনি বলেন, “এই সরকার পবিত্র রমজান মাসেও বিএনপির নেতা-কর্মী গুম করছে।

“তারা মনে করছে, পুলিশ দিয়ে জনগণকে দমন করে রাখবে। পুলিশ বাহিনীকে খারাপ কাজে সরকার ব্যবহার করছে। আমি পুলিশ বাহিনীর উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আপনারা জনগণের সেবক, আপনাদের দায়িত্ব হলো জনগণের নিরাপত্তা দেওয়া। আপনারা ঠিক থাকেন, তাদের পাশে থাকেন।

“আওয়ামী লীগের এই গুন্ডা-সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করবেন, জেলখানায় নিন। ভবিষ্যতে আপনারা ভালো থাকবেন। আপনাদের জন্য আমাদের অনেক কর্মসূচি রয়েছে।”

গুলশানে ইতালীয় নাগরিক চেজারে তাভেল্লা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে বিদেশে পালিয়ে থাকা এম এ কাইয়ুমকে ঢাকা উত্তর বিএনপির সভাপতি করেছেন খালেদা জিয়া। এদিন অনুষ্ঠানে তার ওই মামলা মিথ্যা দাবি তা প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।

বসুন্ধরা কনভেশন সেন্টারে মহানগর বিএনপির উদ্যোগে এই ইফতার মাহফিল হয়। ইফতারের আগে হলরুমে প্রবেশ নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়।

মূল মঞ্চে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব-উন নবী খান সোহেল, উত্তরের সিনিয়র সহ-সভাপতি মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, সাধারণ সম্পাদক আহসানউল্লাহ হাসান, সহসভাপতি আব্দুল আলী নকি, মো. সাহাবুদ্দিনসহ উত্তরের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে ইফতার করেন খালেদা জিয়া।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা ইনাম আহমেদ চৌধুরী, রুহুল আলম চৌধুরী, আতাউর রহমান ঢালী, ফরহাদ হালিম ডোনার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সানাউল্লাহ মিয়া, নুরী আরা সাফা, আমিনুল হক, সাইফুল ইসলাম নিরব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, হাফেজ এম এ মালেক, শাহ নেসারুল হক, উত্তরের নেতৃবৃন্দের মধ্যে আতিকুল ইসলাম মতিন, মাসুদ খান, নবী সোলায়মান, ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টি, আবুল হোসেন, আবুল হাশেম, শাহিনুর আলম মারফত, আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, এজিএম শামসুল হক, কফিলউদ্দিন আহমেদ, শামীম পারভেজ, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, ইউনুস মৃধা, মোশাররফ হোসেন খোকন প্রমুখ ইফতারে ছিলেন।

 
 

আরও খবর

Daraz
 
 
 
 
 
 
 
 
©ambalanews24.com | Developed & Maintenance by AmbalaIT