গুম, খুনের শিকার দলের নেতাকর্মীদের তালিকা প্রকাশ করেছে বিএনপি। গতকাল নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তালিকা প্রকাশ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সংবাদ সম্মেলনে গুমের শিকার হওয়া নেতাকর্মীদের যে তালিকা রিজভী আহমেদ তুলে ধরেন তারা হলেন-সাবেক সাংসদ এম ইলিয়াস আলী, সাবেক সাংসদ সাইফুল ইসলাম হীরু, দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য চৌধুরী আলম, বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবির পারভেজ, তেজগাঁও ছাত্রদল সভাপতি আমিনুল ইসলাম জাকির, তেজগাঁও বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমন, তার খালাত ভাই জাহিদুল করিম (তানভীর), পূর্ব নাখালপাড়ার আবদুল কাদের ভূঁঁইয়া (মাসুম), পশ্চিম নাখালপাড়ার মাজহারুল ইসলাম (রাসেল), মুগদাপাড়ার আসাদুজ্জামান (রানা), উত্তর বাড্ডার আল আমিন, বিমানবন্দর থানা ছাত্রদল নেতা এএম আদনান চৌধুরী ও কাওসার আহমেদ, সবুজবাগ থানা ছাত্রদল সভাপতি মাহাবুব হাসান, খালিদ হাসান (সোহেল) ও সম্রাট মোল্লা, জহিরুল ইসলাম (হাবিবুল বাশার জহির), পারভেজ হোসেন, মো. সোহেল ও মো. সোহেল চঞ্চল, নিজামউদ্দিন মুন্না, তরিকুল ইসলাম ঝন্টু, কাজী ফরহাদ, সেলিম রেজা পিন্টু ও ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন কুসুম। বিএনপির এই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, শুধু ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ২০১৩ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরেই রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের জেলা থেকে বিএনপির অন্তত ৫০ নেতাকর্মীকে গুম করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এবং গুম হওয়া ব্যক্তিদের স্বজনদের থেকে পাওয়া তথ্যমতে, ২০১৩ সাল থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ৪৩৫ ব্যক্তি গুম হয়েছেন। গুম হওয়া মানুষের পরিবারগুলোর নীরব কান্না থেমে নেই। এগুলোর বিষয়ে কি কোনো জবাব দিতে পারবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। বিএনপির কাছে গুম ও খুনের তালিকা চেয়ে তিনি গুম, খুনের শিকার হওয়া নেতাকর্মীদের স্বজনদের উপহাস করেছেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদকে ৭০ দিন গুম করে রাখার পর ভারতের মেঘালয় রাজ্যে ফেলে আসা হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি। রিজভী বলেন, ভারত থেকে আসা উজানের পানিতে দেশের কয়েকটি জেলা ভাসছে। এ অবস্থায় মন্ত্রী-এমপিরা বন্যাদুর্গত এলাকায় মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ না করে সংসদে বসে বিচারপতিদের চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধারে মেতেছেন। সত্যিকারের জনপ্রতিনিধি হলে তারা বন্যার্ত ও ক্ষুধার্ত মানুষের কাছে ত্রাণ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তেন। রিজভী বলেন, সরকারের সর্বশেষ আক্রোশের শিকার হয়েছেন ফরহাদ মজহার। তিনি এখন এতটাই মানসিক আঘাতপ্রাপ্ত যে, শোনা যাচ্ছে-মানুষজন ও আত্মীয়-স্বজনদের চিনতেও নাকি তার কষ্ট হচ্ছে। অথচ তার অপহরণ ঘটনাকে এখন নাটক বানাতে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে সরকার। কিন্তু সরকারি কোনো চক্রান্ত ফরহাদ মজহারের অপহরণের ঘটনায় সাজানো নাটক মানুষকে বিশ্বাস করাতে পারবে না। মানুষ যা বোঝার তা ইতোমধ্যেই বুঝে গেছে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও হাবিব-উন-নবী খান সোহেল।