ঢাকা মহানগরকে দক্ষিণ ও উত্তরে ভাগ করে হাবিব উন নবী খান সোহেল এবং আব্দুল কাইয়ুমকে নেতৃত্বে এনেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি সোহেলকে বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি করা হয়েছে। বিদায়ী ঢাকা মহানগর আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব সোহেল দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব পদে আছেন।
এই কমিটিতে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সূত্রাপারের সাবেক কমিশনার কাজী আবুল বাশারকে, যিনি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সমাজকল্যাণ সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সভাপতি করা হয়েছে ইতালির নাগরিক চেজারে তাভেল্লা হত্যাকাণ্ডের আসামি কাইয়ুমকে। গুলশান-বাড্ডা এলাকার এই সাবেক কমিশনার প্রায় দুই বছর ধরে লোকচক্ষুর অন্তরালে।
কাইয়ুম বিদায়ী মহানগর আহ্বায়ক কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্বে ছিলেন। কেন্দ্রীয় কমিটির ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক তিনি।
২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে গুলশানে সন্ত্রাসীদের গুলিতে তাভেল্লা নিহত হওয়ার পর এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে কাইয়ুমের নাম পর আর জনসমক্ষে আসেননি তিনি। তার ভাই আব্দুল মতিন এই মামলায় কারাগারে। পরোয়ানা নিয়ে পলাতক কাইয়ুমেরও বিচার চলছে।
ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে কাফরুল এলাকার সাবেক কমিশনার আহসানউল্লাহ হাসানকে।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর আন্দোলনে ব্যর্থতার কারণে সাদেক হোসেন খোকার নেতৃত্বাধীন মহানগর কমিটি ভেঙে দেয় বিএনপি।
এরপর ওই বছর ১৮ জুলাই দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে আহ্বায়ক করে ৫২ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। ছয় মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাদের।
এর দুই বছর ৮ মাস পর ঢাকাকে দুই ভাগে ভাগ করে নতুন কমিটি দিল বিএনপি।
খালেদা জিয়ার নির্দেশে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মঙ্গলবার ঢাকা দক্ষিণের ৭০ সদস্যের এবং উত্তরের ৬৪ সদস্যের এই আংশিক কমিটি অনুমোদন করেন।
দক্ষিণের কমিটিতে সহ-সভাপতি পদে রাখা হয়েছে ২৬ জনকে। এরা হলেন- শামসুল হুদা, ইউনুস মৃধা, নবী উল্লাহ নবী, মীর হোসেন মীরু, আবু মোতালেব, নাসিমা আখতার কল্পনা, ফরিদ উদ্দিন, সাজ্জাদ জহির, মোস্তাফিজুর রহমান হিরু, গোলাম হোসেন, আনভীর আদেল খান বাবু, আরিফুর রহমান আরিফ, ইশরাত মির্জা, মোশাররফ হোসেন খোকন, আতিক উল্যাহ আতিক, মীর আশরাফ আলী আজম, মো. মোহন, জয়নাল আবেদীন রতন, আব্দুল লতিফ, সিরাজুল ইসলাম, হাজী দেলোয়ার হোসেন, আবুল হাসান ননি তালুকদার, হামিদুর রহমান হামিদ, এসকে সেকান্দার কাদির, সাব্বির হোসেন আরিফ ও নিতাই চন্দ্র ঘোষ।
এই কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক আছেন তিন জন- তানভীর আহমেদ রবিন, সাইফুল ইসলাম পটু ও রফিকুল ইসলাম রাসেল।
দপ্তর সম্পাদক সাঈদুর রহমান মিন্টু ও প্রচার সম্পাদক আব্দুল হাই পল্লব।
এছাড়া এই আংশিক কমিটিতে ১৯ জন যুগ্ম সম্পাদক এবং ১৮ জন সহ- সাধারণ সম্পাদক রয়েছেন।
উত্তরের আংশিক কমিটিতে সহ-সভাপতি ২৩ জন। এরা হলেন- মুন্সী বজলুল বাসিত আনজু, আব্দুল আলী নকি, মো. সাহাব উদ্দিন, মোয়াজ্জেম হোসেন, মশিউর রহমান মশু, আতিকুল ইসলাম মতিন, আলী ইমাম আসাদ, মাসুদ খান, ফয়েজ আহমেদ ফরু, কাজী হযরত আলী, মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, নবী সোলায়মান, ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টি, এ এল এম কাওসার আহমেদ, রবিউল আউয়াল, আলতাফ উদ্দিন মোল্লা, শামসুল হক, এসএম আনোয়ার হোসেন, আবুল হোসেন, আনোয়ার হোসেন, আবুল হাশেম, শাহিনুর আলম মারফত ও আক্কেল আলী।
সাংগঠনিক সম্পাদক তিনজন হলেন- আক্তার হোসেন, সৈয়দ মনজুর হোসেন মঞ্জু ও সোহেল রহমান।
কোষাধ্যক্ষ হয়েছেন আতাউর রহমান চেয়ারম্যান। দপ্তর সম্পাদক এ বি এম আবদুর রাজ্জাক, প্রচার সম্পাদক ভিপি হানিফ ও প্রকাশনা সম্পাদক মশিউর রহমান বাবু।
এছাড়া ১৩ জন যুগ্ম সম্পাদক ও ১৯ জন সহ-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আছেন।
দলের প্যাডে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকার দুই আংশিক কমিটি অনুমোদনের কথা জানানো হয়।
এতে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মহানগর দক্ষিণ ও উত্তরের অনুমোদিত নির্বাহী কমিটি আগামী এক মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করবে।