সবার কাছে গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ, সৎ ও যোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সংলাপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশাবাদী বিএনপি।
বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক শেষে রোববার (১৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কর্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠক অত্যন্ত হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে বিএনপির প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং আলোচনার শুরুতেই তিনি বলেছেন যেহেতু আপনারাই কেবল আমাকে নির্বাচন কমিশন গঠনের ব্যাপারে আহ্বান জানিয়েছেন সেহেতু, সবার আগে আমি আপনাদেরকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি।
খালেদা জিয়ার প্রস্তাবের সংক্ষিপ্ত ও পূর্ণাঙ্গ কপি রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এজন্য রাষ্ট্রপতি বিএনপির চেয়ারপারসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। যে চেয়ারপারসন অত্যন্ত গঠনমূলকভাবে সুন্দর প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন, ভবিষ্যতে নির্বাচন কমিশন গঠন ও গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবেন বলে তিনি মনে করেন।
একই সঙ্গে রাষ্ট্রপতি অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সংলাপের কোনো বিকল্প নেই। বর্তমান সমস্যার সমাধান আলোচনার মাধ্যমে করতে হবে বলে তিনি মনে করেন।
সুতরাং আমরা অত্যন্ত আশাবাদী সবার কাছে গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ, সৎ ও যোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বিএনপির সংলাপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে-বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপির মহাসচিব জানান, মূলত তিনটি বিষয়ের উপর আমরা জোর দিয়েছি। বিষয় তিনটি হলো- বাছাই কমিটি গঠন, নির্বাচন কমিশন গঠন ও আরপিও সংশোধন। আপনারা জানেন, কীভাবে বাছাই কমিটি হবে, কীভাবে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে এবং আরপিও সংশোধন কোন প্রক্রিয়ায় হবে, সে পদ্ধতিটাও আমরা উল্লেখ করেছি। রাষ্ট্রপতি এই পদ্ধতিগুলো পরীক্ষা করে দেখবেন।
ফখরুল বলেন, রাষ্ট্রপতি মনে করেন, একটি নিরপেক্ষ, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন করা জাতির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন, সেজন্য সব রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা তিনিও আশা করেন।
বাছাই কমিটির ব্যাপারে খালেদা জিয়া তার সুনির্দিষ্ট মতামত রাষ্ট্রপতির কাছে তুলে ধরেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা আশা করছি, সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে পদ্ধতিগত দিক ঠিক করবেন এবং পদ্ধতিগত বিষয় ঠিক হওয়ার পর আবার তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসবেন। আমরা আশা করছি আগামী মাসের মধ্যেই এই প্রক্রিয়াটা শেষ হবে।
তিনি বলেন, আজকে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক করে আমরা খুশি হয়েছি, আশাবাদী হয়েছি। তিনি আপাদমস্তক একজন রাজনীতিবিদ। তিনি দীর্ঘকাল ধরে বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। আমরা আশা করি, চলমান সংকট থেকে উত্তরণের জন্য তার এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে ফলপ্রসূ ভূমিকা পালন করবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।