মুমূর্ষু ব্যক্তি মারা গেলে তার চোখ দু’টো খোলা থাকলে তা বন্ধ করে দিতে হবে। তার জেন্য দো‘আ করতে হবে। কারণ তখন তার জন্য যে দো‘আ করা হয় তাতে ফেরেশতাগণ আমীন বলেন। রাসূল (ছাঃ) আবু সালামার জন্য দো‘আ করে বলেছিলেন, ‘হে আল্লাহ! আপনি তাকে মাফ করুন। হেদায়াতপ্রাপ্তদের মধ্যে তাকে উচ্চ মর্যাদা দিন, তার উত্তরসুরীদের জন্য আপনি তার প্রতিনিধি হৌন। আপনি আমাদেরকে ও তাকে ক্ষমা করুন। হে বিশ্ব চরাচরের প্রতিপালক! আপনি তার জন্য তার কবরকে প্রশস্ত করুন এবং সেখানে তার জন্য আলোর ব্যবস্থা করুন’।এরপর গোসল করাবে, কাফন পরাবে এবং ঋণ থাকলে নিকটাত্মীয়রা পরিশোধ করবে। তবে যে কেউ তার পক্ষ থেকে ঋণ পরিশোধ করতে পারে। অতঃপর জানাযার ছালাত আদায় করে দাফন কার্য সম্পন্ন করবে। এরপর মাইয়েতের জন্য হাত না তুলেই প্রত্যেকে দো‘আ করবে। এ সময় ‘আল্লাহুম্মাগফিরলাহু ওয়া ছাবিবতহু’ বলতে পারে।এছাড়া আল্লাহুম্মাগফিরলাহু ওয়ারহামহু.. মর্মে বর্ণিত দো‘আটিও পড়তে পারে। তার জন্য তিনদিন শোক পালন করা যাবে। তবে স্ত্রী স্বামীর জন্য চার মাস দশ দিন শোক পালন করবে। তবে তার জন্য বিলাপ ও মাতম করা যাবে না।
তাদের জন্য দান-ছাদাক্বা করা যাবে।
রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘যখন মানুষ মৃত্যুবরণ করে তখন তার তিনটি আমল ব্যতীত সবগুলি আমল বন্ধ হয়ে যায়-
(১) ছাদাক্বায়ে জারিয়াহ
(২) এমন জ্ঞান, যার দ্বারা অন্যরা উপকৃত হয়
(৩) নেক সন্তান, যে পিতার জন্য দো‘আ করে’।
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘মৃত্যুর পরও মুমিন ব্যক্তির যেসব সৎকর্ম ও অবদান তার আমলনামায় যোগ হ’তে থাকবে, সেগুলি হ’ল-
(১) ইলম : যা সে শিক্ষা করেছে এবং মানুষের মাঝে প্রচার-প্রসার ও বিস্তার করে গেছে
(২) নেক সন্তান : যাকে সে দুনিয়ার রেখে গেছে
(৩) কুরআন : যা মীরাছ রূপে সে রেখে গেছে
(৪) মসজিদ : যা সে নির্মাণ করে গেছে
(৫) মুসাফির খানা : যা সে পথিক-মুসাফিরদের জন্য তৈরী করে গেছে
(৬) খাল, কুয়া, পুকুর প্রভৃতি : যা সে খনন করে গেছে
(৭) দান : যা সে সুস্থ ও জীবিত অবস্থায় তার মাল হ’তে করে গেছে (এগুলোর ছওয়াব) মৃত্যুর পরও তার নিকট পৌঁছতে থাকবে’।
তিনি আরো বলেন, মৃত্যুর পর ক্বিয়ামত পর্যন্ত বান্দার সাতটি আমল প্রবহমাণ থাকে।
(১) দ্বীনী ইলম শিক্ষাদান
(২) নদী-নালা প্রবাহিত করণ
(৩) কূপ খনন
(৪) খেজুর বৃক্ষ রোপণ
(৫) মসজিদ নির্মাণ
(৬) কুরআন বিতরণ
(৭) এমন সন্তান রেখে যাওয়া, যে পিতার মৃত্যুর পর তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে’।