দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার সাজার রায় ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক’ অভিহিত করে সারাদেশে শুক্র ও শনিবার বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের দায়ে বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের রায় ঘোষণার প্রায় দেড় ঘণ্টা পর দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, “দেশনেত্রী খুব স্পষ্ট করে বলেছেন, নির্দেশ দিয়ে বলেছেন কোনো রকমের কোনো হঠকারী কর্মসূচি দেয়া যাবে না, কোনো রকমের সহিংস কোনো কর্মসূচি দেয়া যাবে না। সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করতে হবে, বিক্ষোভ করতে হবে। এই কথাটা বরাবরই বলেছেন তিনি।
“সেজন্য দেশনেত্রীর নির্দেশে শুক্রবার জুমার নামাজের পর সারাদেশে জেলা-উপজেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ও নিয়মাতান্ত্রিক কর্মসূচি হবে। পরদিন শনিবারও সারাদেশে প্রতিবাদ কর্মসূচি হবে।” নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান রুহুল আলম চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল বলেন, “আমরা আমাদের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানাব, দেশনেত্রীর শেষ কথা ধৈর্য্য ধরতে হবে। গণতন্ত্রের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। সেই ত্যাগ স্বীকার করে জনগণের স্বার্থে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিতে হবে।”এ ব্যাপারে সরকারকে ‘কোনো প্রকার উস্কানি’ না দেওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “বুধবার গুলশানে সংবাদ সম্মেলনে আমরা স্থায়ী কমিটির সদস্যরা দেশনেত্রীর সাথে কথা বলি। তার কাছে আমরা জানতে চেয়েছিলাম যদি রায় আপনার বিপক্ষে যায় তাহলে আমাদের পক্ষে কী ধরনের কর্মসূচি আমরা দেব। তিনি খুব স্পষ্ট করে বলেছেন, নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, কোনো রকমের হঠকারী কর্মসূচি দেওয়া যাবে না।”
বৃহস্পতিবার পুরান বকশীবাজারে আদালতে খালেদার উপস্থিতিতে ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আখতারুজ্জামান এই রায় ঘোষণা করেন।
মামলার ছয় আসামির মধ্যে খালেদার বড় ছেলে বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং মাগুরার সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল, সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদের হয়েছে দশ বছর করে কারাদণ্ড।
সেই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার করে জরিমানা করেছেন বিচারক।
রায় ঘোষণার পর খালেদাকে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।