দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত গাইবান্ধার সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের জানাজা হয়েছে সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে।
সোমবার সকালে জানাজার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতারা দলের এই সংসদ সদস্যের কফিনে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান।
গত শনিবার গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে বাড়িতে ঢুকে লিটনকে গুলি করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু ঘটে।
রংপুর থেকে হেলিকপ্টারে করে রোববার লিটনের লাশ আনা হয় ঢাকায়। হাসপাতালের হিমঘর থেকে সোমবার সকালে কফিন নেওয়া হয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায়।
সেখানে জানাজায় অংশ নেন ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া, জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজমসহ মন্ত্রিসভার সদস্যরা।
সংসদের প্রধান হুইপ আ স ম ফিরোজ, সংসদ সদস্য মাহাবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, ইকবালুর রহিম, বি এম মোজাম্মেল হক ও শামীম ওসমানসহ আওয়ামী লীগ নেতারাও জানাজায় উপস্থিত ছিলেন।
জানাজার আগে লিটনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, লিটনের ভগ্নিপতি আবদুল্লাহ বিল বারী, মাহাবুব-উল আলম হানিফ এবং ফজলে রাব্বী মিয়া।
গাইবান্ধার সংসদ সদস্য ও ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, “অপরিণত বয়সে লিটনের মৃত্যু হয়েছে। এটা জামাত-শিবিরের চক্রান্ত। গোলাম আজমকে সুন্দরগঞ্জের মাটিতে নামতে দেয়নি লিটন। এই দোষের শিকার হল লিটন।”
জানাজা শেষে রাষ্ট্রপতির পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল সারোয়ার হোসেন প্রয়াত এই সাংসদের কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গাইবান্ধা -১ আসনে দলীয় এই সংসদ সদস্যের কফিনে ফুল দিয়ে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
প্রধানমন্ত্রীর পর স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী প্রয়াত এই সংসদ সদস্যের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
স্পিকারের পর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে লিটনের কফিনে ফুল দেন শেখ হাসিনা। কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি এসময় উপস্থিত ছিলেন।
এরপর ফুল দেন ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া এবং প্রধান হুইপ আ স ম ফিরোজ।
শ্রদ্ধা নিবদেনের পর প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত এই সংসদ সদস্যের পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেন।
ঢাকায় এই জানাজার পর লিটনের লাশ গাইবান্ধায় নিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।
লিটন হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে গত দুদিন ধরে সুন্দরগঞ্জে হরতাল চলছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের ডাকে।
লিটনকে কারা মেরেছে, সেই বিষয়ে এখনও স্পষ্ট তথ্য জানাতে পারেনি পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সন্দেহভাজন ১৮ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
লিটনের বোন রোববার রাতে সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেছেন। তাতে অজ্ঞাতনামা পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।