প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে বাধ্য করে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে অভিযোগ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, এ যাত্রায় সরকার নিজেদের সফল ভাবলেও তাদের পরিণতি হবে ভয়াবহ।
আজ সোমবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক প্রতিবাদ সভায় গয়েশ্বর এ মন্তব্য করেন।
‘সর্বোচ্চ আদালত ধ্বংসের নীলনকশার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ’ শীর্ষক ওই সভার আয়োজন করে শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোট।
‘প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা কোনো বিষয়বস্তু না, বিষয়বস্তু হলো বিচার বিভাগ। আওয়ামী লীগের লোকেরা অশ্রাব্য এবং অসংশোধনীয় ভাষায় গালাগালি করে, তাতে কি আদালত অবমাননা এবং মানহানি মামলা হয় না? প্রধান বিচারপতির এই ছুটির আগে এক মাসের ছুটি নিয়ে কিন্তু তিনি জাপান ও কানাডা সফর করেছেন। সেই ছুটির চিঠি কিন্তু আইনমন্ত্রী টেলিভিশনে দেখাননি’, বলেন গয়েশ্বর।
‘এবারের চিঠিতে পাঁচটি ভুল নিয়ে প্রধান বিচারপতি স্বাক্ষর করেছেন। আদৌ উনি কি স্বাক্ষর করেছেন? উনি (প্রধান বিচারপতি) অসুস্থ, কিন্তু কই গেলেন? ঢাকেশ্বরী, গেলেন অস্ট্রেলিয়ান এমবাসিতে (দূতাবাস), সরকারের ফরমায়েশ লোকেরা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারেন। কিন্তু আইনজীবীদের দেখা করতে দেওয়া হলো না। গোটা ব্যবস্থাটাই কিন্তু বিচার বিভাগের ওপর নগ্ন হামলা। তাহলে রাষ্ট্রের অস্তিত্ব কোথায়? আর গণতন্ত্র শব্দটা বাদ দেন, সেটা কাগজে-কলমে আছে’, যোগ করেন গয়েশ্বর।
বিচার বিভাগ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বিএনপির বর্ষীয়ান এই নেতা বলেন, ‘বিচার বিভাগ সরকারের নয়, জনগণের। সুতরাং জনগণের কথা বলার অধিকার আছে। ২০০৫ সালের জানুয়ারি মার্কা নির্বাচন শেখ হাসিনার পক্ষে সম্ভব নয়, অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়, তাঁর অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। শেখ হাসিনার পতনই এখন মূল উদ্দেশ্য। এর আগে নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা নয়। এস কে সিনহা তো বিষয় না, তিনি অস্ট্রেলিয়া যাবেন, যান। সেখানে গিয়ে আবার কী বলেন, দেখেন!’
ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে গয়েশ্বর বলেন, ‘ষোড়শ সংশোধনীর রায় তো সাতজন একসঙ্গেই ঐকমত্যের ভিত্তিতে একসঙ্গেই স্বাক্ষর করেছেন, এস কে সিনহার ছুটি নিতে হয়, বাকি ছয়জনও ছুটি নেন না কেন? এস কে সিনহার জন্য জ্বলে, বাকিদের জন্য জ্বলে না?’
প্রতিবাদ সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ও শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, সাংবাদিক নেতা কাদের গণি চৌধুরী, কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মিজানুর রহমান প্রমুখ।