চীনে প্রেসিডেন্টের দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালনের রীতিতে পরিবর্তন এনে বিল পাস করেছে দেশটির ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেস। আজ বোরবার দলীয় সভায় বিলটি পান হয়।
বিবিসি জানায়, পূর্ববর্তী আইন অনুযায়ী বর্তমান প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ২০২৩ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালনের কথা থাকলেও নতুন বিল পাস হওয়ার ফলে আজীবন ক্ষমতায় থাকার সুযোগ তৈরি হয়েছে তাঁর।
চীনের গ্রেট হলে বসে ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের বার্ষিক সভা। এতে অংশ নেন প্রায় তিন হাজার দলীয় প্রতিনিধি। সভায় প্রেসিডেন্টের নির্ধারিত মেয়াদ বাতিল করে তা আজীবন করার একটি বিল উত্থাপন করা হয়। পরে দলীয় প্রতিনিধিরা এভাবেই সারিবব্ধভাবে লাল ব্যালটে বিলটি পাসের জন্য ভোট দেন। একচেটিয়া দুই হাজার ৯৫৮টি ভোট পড়ে বিলটির পক্ষে। বিপক্ষে পড়ে দুই ভোট। ভোটা দেওয়া থেকে বিরত ছিলেন তিন কংগ্রেস প্রতিনিধি। নিরঙ্কুশ এই সমর্থন নিয়ে পাস হয় বিলটি। আর এতে করে বর্তমান প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের আমৃত্যু ক্ষমতায় থাকতে আর কোনো বাধা থাকল না। আর এটিকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন দলীয় প্রতিনিধিরা।
ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের তিয়ানজিন অঞ্চলের প্রতিনিধি জেং বোলি বলেন, ‘প্রেসিডন্টের মেয়াদ বিলুপ্তির মাধ্যমে আমরা পলিসির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারব এবং এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সমর্থন অব্যাহত থাকবে, যা চীনে নতুন জাগরণ সৃষ্টি করবে। আমি মনে করি এটা অবশ্যই চমৎকার একটি সিদ্ধান্ত।’
যদিও প্রেসিডেন্টের মেয়াদ আমৃত্যু করার বিষয়টি চীনে নতুন নয়। ১৯৯০-এর আগেও এই বিধান ছিল। চীনকে এগিয়ে নিতে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে পুরোনো ধারায় ফেরার প্রয়োজন আছে বলেও মনে করেন অনেকে।
ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের জিয়াংসুর প্রতিনিধি চেন চেং বলেন, ‘আমরা মনে প্রাণে বিশ্বাস করি, দেশের নেতৃত্ব সুসংহত করতে এবং রাজনৈতিক ধারা স্থিতিশীর করতে সংবিধানের এই সংশোধন দরকার ছিল।’
শি জিনপিং ২০১২ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। এ ছাড়া কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদ হিসেবে শি দেশটির ইতিহাসে ধারাবাহিকভাবে আত্মপ্রত্যয়ী ও নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ববাদী একটি যুগের সূচনা করেন বলে বিবেচনা করা হয়। একইসঙ্গে তাঁর হাত ধরে চীন এক নতুন জাগরণ দেখতে পেয়েছে বলেও মনে করা হয়। আধুনিক চীনের রূপকার হিসেবে স্বীকৃত মাও সে তুংয়ের পর শি জিনপিং হলেন দ্বিতীয় ব্যক্তি, যার চিন্তা দলীয় গঠনতন্ত্রে মতাদর্শের মর্যাদা পায়।