পাকিস্তান পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ কওমী পরিষদ বা জাতীয় পরিষদের সাধারণ নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফল ঘোষণা করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। যেখানে এগিয়ে রয়েছে সাবেক তারকা ক্রিকেটার ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। তবে নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলে এই ফলকে প্রত্যাখ্যান করেছেন নওয়াজ শরীফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পিএমএল-এন) সভাপতি শাহবাজ শরীফ।
প্রাথমিক ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে কারাবন্দি নওয়াজ শরীফের ভাই শাহবাজ শরীফ বুধবার (২৬ জুলাই) দিনগত রাত ১০টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করেন।পরে রাত ১টার দিকে টুইটারেও তার অবস্থানের কথা জানান।
নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজীর ভুট্টোর পুত্র বিলওয়াল ভুট্টো জারদারিও, যিনি এখন নেতৃত্ব দিচ্ছেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি)।
শাহবাজ শরীফ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ভোটে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। নির্বাচন কমিশন প্রাথমিকভাবে যে ফলাফল ঘোষণা করেছে তা তার দল মেনে নেবে না। ‘আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, আমরা এ ফল পুরোপুরি প্রত্যাখান করলাম। এ নির্বাচনের জনগণের রায়কে ভয়ঙ্করভাবে লঙ্ঘণ করা হয়েছে।’ ‘ফলাফল গণনার সময় সারাদেশেই আমাদের নির্বাচনী এজেন্টদের রাখা হয়নি। তাদের ভোটকেন্দ্র থেকে রেব করে দেওয়া হয়েছে।’
এদিকে রাত ১টায় এক টুইটার বার্তায় তিনি লেখেন- স্পষ্ট এবং ব্যাপক অনিয়মের কারণে সাধারণ নির্বাচন-২০১৮ এর ফলাফল পুরোপুরি প্রত্যাখান করল পিএমএল-এন। আমাদের এজেন্টদের ৪৫ নম্বর ফরম দেওয়া হয়নি, ফলাফল স্থগিত রাখা হয়েছে এবং ভোট গণনার সময় আমাদের পোলিং এজেন্টেদের বের করে দেওয়া হয়। এই দুটো ঘটনাই অসহনীয় এবং অগ্রহণযোগ্য।’
অন্যদিকে বিলওয়াল ভুট্টো জারদারিও রাত ১টা ২১ মিনিটে এক টুইটবার্তায় নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেছেন- ‘মধ্যরাত পার হলো এবং আমি আমার নিজের নির্বাচনী কোনো এলাকার ফলাফল এখনও হাতে পাইনি। আমার প্রার্থীরা অভিযোগ করেছেন, সারাদেশেই আমাদের পোলিং এজেন্টদের ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এটা ‘অযৌক্তিক’ এবং ‘বিদ্বেষপূর্ণ’।
পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে মোট ৩৪২টি আসনের মধ্যে মহিলা ও সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায়ের জন্য যথাক্রমে ৬০টি ও ১০টি আসন সংরক্ষিত। অবশিষ্ট ২৭২টি আসনে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়। সরকার গঠনের জন্য কোনো দলকে ১৩৭টি আসন পেতে হবে। অন্যথায় জোট গঠন করে সরকার গঠনের প্রক্রিয়ায় যেতে হবে দলগুলোকে।
নির্বাচন কমিশনে (ইসিপি) নিবন্ধিত ১২০টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে এবারের সাধারণ নির্বাচনে ৯৫টি দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে সরকার গঠনের লড়াইয়ে এগিয়ে রয়েছে পিএমএল-এন, পিটিআই ও পিপিপি। রাত পৌনে ৪টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ২৬ শতাংশ ভোট গণনার প্রাথমিক ফলাফল বলছে ইমরান খানের পিটিআই ১১১টি আসন পেয়ে এগিয়ে রয়েছে।
নওয়াজ শরীফের পিএমএল পেয়েছে ৬৫টি আসন। পিপিপি ৪২টি নিয়ে পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে পিপিপি। মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট-এমকিউএম পেয়েছে ৫টি এবং মুত্তাহিদা মজলিস-ই-আমল-এমএমএ পেয়েছে ৯টি আসন। বাকি ৪০টির ফলাফল এখনও আসেনি।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুলাই) সকালে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করার কথা রয়েছে।