অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, এবার বাজেটে সর্বোচ্চ বরাদ্দ থাকবে বিদ্যুৎ খাতে। এ ছাড়া গুরুত্ব পাবে মানবসম্পদ খাত। আসন্ন বাজেটে রাজস্ব আয়ের চাপ বাড়বে। গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদপত্রের সম্পাদক, প্রকাশক এবং বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে ৩২ হাজার ভ্যাটদাতা রয়েছেন। আগামী পাঁচ বছরে ভ্যাটদাতা হবে পাঁচ লাখ। তিনি বলেন, বাজেটে সরকারের মেগা প্রকল্পগুলো সম্পর্কে আলাদা পুস্তক প্রকাশিত হবে। এ ছাড়া ২০১৮ সালেই পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হবে। তবে রেল সেতুর কাজ কিছুটা বাকি থাকবে। প্রাক-বাজেট আলোচনায় ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত বিএনপির রূপকল্প নিয়ে মুহিতের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, সকালে বিএনপির এই ভিশন-২০৩০ সম্পর্কে পুরো তথ্য জানার জন্য আটটি সংবাদপত্র পড়েছি। এই পত্রিকাগুলোতে ভিশন সম্পর্কে পরিপূর্ণ কোনো তথ্য পাইনি। আমি চিন্তা করেছি, বিএনপি অফিস থেকে একটি কপি আনিয়ে নেব। সেটি পড়ব। এ সময় শ্যামল দত্ত ভিশন-২০৩০-এর উল্লেখযোগ্য কিছু অংশ তুলে ধরেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, বিএনপি দেশের একটি রাজনৈতিক দল। তাদের পক্ষ থেকে যে ভিশন দেওয়া হয়েছে, তা ইতিবাচক। এটি দেশ এবং জাতির জন্য ভালো। মুহিত বলেন, আগামী জুলাই থেকে কার্যকর হতে যাওয়া নতুন ভ্যাট আইনে ভ্যাটের হার ১৫ শতাংশ থেকে কমানো হতে পারে। এ ছাড়া সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী বছর জিডিপির (মোট জাতীয় উত্পাদন) প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৪ শতাংশ ধরা হয়েছে। তবে চলতি অর্থবছরই প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৭ শতাংশ অর্জিত হবে বলে জানান তিনি। উপস্থিত কয়েকজন সম্পাদক তার কাছে জানতে চান, এটা তার শেষ বাজেট কি না। জবাবে মুহিত জানান, ‘এটি নয় এর পরেরটা হবে আমার শেষ বাজেট। এটি আমার নিজস্ব সিদ্ধান্ত। আর এ বছর গেলে আমার ১১ বার বাজেট পাস হবে। ১২ করে বিদায়। নিশ্চিত মনে হয়, আমার যিনি সিদ্ধান্ত দেবেন তিনি দিয়েছেন ছুটি।’ এ সময় বিদেশি টিভি চ্যানেলের ল্যান্ডিং ফি ২০ কোটি টাকা করার দাবি জানান বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলোর প্রধান নির্বাহীরা। বৈঠকে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, দৈনিক সমকালের সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, প্রকাশক এ. কে. আজাদ, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, মাছরাঙা টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী, চ্যানেল আইয়ের ডিরেক্টর অব নিউজ শাইখ সিরাজ, আরটিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আশিকুর রহমান চৌধুরী, আমাদের অর্থনীতির সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান, এটিএন বাংলার হেড অব নিউজ জ. ই. মামুন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান, অর্থ সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল-মামুন, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ইউনুসুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।