এ বছরই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের মেয়াদ পূর্ণ হচ্ছে। আগামী বছর ২৯ জানুয়ারি সরকার দায়িত্ব গ্রহণের ৫ বছর পূর্ণ হবে। সংবিধানে সরকারের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বিধান থাকায় আগামী ডিসেম্বরের শেষ দিকে একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ফলে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটই বর্তমান সরকারের শেষ বাজেট।
বৃহস্পতিবার (২৮ জুন) সকাল সোয়া ১০টায় ২১তম অধিবেশনে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ৭১ হাজার ৮৩৩ কোটি ৮২ লাখ ৯২ হাজার টাকা ব্যয়ের অনুমোদন দিয়ে নির্দিষ্টকরণ বিল ২০১৮ উত্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
এবারের বাজেটে ৫৯টি মন্ত্রণালয়ের মঞ্জুরির দাবির বিপরীতে ৪৪৮টি ছাঁটাই প্রস্তাব আনা হয়। এরমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দাবির ওপর আনীত ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনা হয়।
সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির ৯ জন সংসদ সদস্য এসব ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনা করলেও তারা নিজেরাই বরাদ্দ বাড়ানোর কথা বলে নিজেদের দাবি তুলে ধরেন।
এর আগে গত ৭ জুন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ’ শিরোনামে তার জীবনের ১২তম বাজেট সংসদে পেশ করেন। এই বাজেট পেশ করার মধ্য দিয়ে বিএনপির অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের সমান বাজেট দেওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেন অর্থমন্ত্রী। টানা ১০ বাজেট দেওয়ার অনন্য কৃতিত্বও তার।
অর্থমন্ত্রী ২৫ শতাংশ ব্যয় বাড়িয়ে ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছিলেন। এরপর ১১ জুন থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত প্রস্তাবিত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের বাজেটের ওপর সরকারি ও বিরোধী দলের সদস্যরা সাধারণ আলোচনা করেন। প্রায় ৫০ ঘণ্টা আলোচনার পর বৃহস্পতিবার সেই বাজেট পাস হয়। নতুন এই অর্থবছর আগামী ১ জুলাই রোববার থেকে কার্যকর হবে।
২০১৮-১৯ অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৩৯ হাজার ২৮০ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে ২ লাখ ৯৬ হাজার ২০১ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১১ দশমিক ৭ শতাংশ। এনবিআর এর বাইরে অন্যান্য খাত থেকে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা (জিডিপির ০. দশমিক ৪ শতাংশ) এছাড়া কর বর্হিভূত খাত থেকে রাজস্ব আহরিত হবে ৩৩ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা (জিডিপির ১ দশমিক ৩ শতাংশ)।