ভারতের এক দম্পতি এভারেস্টের চূড়ায় ওঠার যে দাবি জানিয়েছিলেন তা তদন্ত করার পর ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে। এ কারণেই ওই পুলিশ দম্পতিকে বরখাস্ত করা হয়েছে। দিনেশ ও তারাকেশ্বরী রাঠোর গত বছর দাবি করেছিলেন,তারা এক সামিটে আট হাজার আটশো পঞ্চাশ মিটার উঁচু এভারেস্টের চূড়ায় সফলভাবে উঠতে পেরেছেন। পরবর্তীতে তাদের সেই চূড়ায় ওঠার ছবি ভুয়া বলে অভিযোগ ওঠে। এর ফলে তদন্ত শুরু হয়। মহারাষ্ট্রের পুলিশ সোমবার (৭ আগস্ট) জানিয়েছেন, এই দম্পতি পর্বতের চূড়ায় আরোহণ না করেই ছবি রূপান্তরের মাধ্যমে তাদের সফলতার দাবি করেছিলেন। অতিরিক্ত কমিশনার সাহেবরাও পাতিল পিটিআই নিউজ এজেন্সিকে বলেছেন, এই পুলিশ দম্পতি 'বিভ্রান্তিকর তথ্য শেয়ার করেছে' এবং 'মহারাষ্ট্রের পুলিশ বিভাগের সুনাম নষ্ট করেছে'। আর সে কারণেই তাদের বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে এই পুলিশ দম্পতির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ দায়ের করা হবে কিনা সে বিষয়টা এখনো স্পষ্ট নয়। এদিকে পর্বত চূড়ায় ওঠা নিয়ে ভুয়া তথ্য দেবার কারণে নেপালের কর্তৃপক্ষও এই দম্পতিকে তাদের দশ বছরের জন্য নেপালে পর্বতারোহণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। রাঠোর দম্পতি প্রথমে সাংবাদিকদের বলেছিলেন যে 'তাদের ছবিগুলো বাস্তব, সেখানে কোনো ফাঁকফোঁকর নেই'। কিন্তু ব্যাঙ্গালোরের এক পর্বতারোহী সত্যরূপ সিধান্থা পরে মিডিয়ার কাছে দাবি করেন, রাঠোর দম্পতি এভারেস্টে চূড়ায় ওঠার প্রমাণ হিসেবে যে ছবিগুলো দেখাচ্ছে সেগুলোর বেশিরভাগই তাঁর ছবি। সন্দেহ আরো ঘণীভূত হয় রাঠোর দম্পতির সংবাদ সম্মেলনের সময় আর পর্বতের চূড়ায় ওঠার দাবি করার সময়ের পার্থক্যের কারণে। সামিটের অনেকে সন্দেহ করছিল যে এই দম্পতি হয়তো চূড়ায় উঠেনি কারণ খুব তাড়াতাড়ি তাদের বেস ক্যাম্পে ফিরতে দেখা যায়। এছাড়া তারা চূড়ায় আরোহণের যে ছবি দেখাচ্ছিল সেখানেও দুই ধরনের কাপড় ও বুট পরনে ছিল তাদের, চূড়ায় উঠার সময়টায় পোশাক দু'ধরনের দেখেও অনেকের মনে সন্দেহ জাগে। এরপর ভালোভাবে তদন্ত শুরু হয়। নেপালের অর্থনীতির একটা বড় উৎস এই পর্বতারোহণ। তবে ২০১৫ সালের ভূমিকম্পের পরে এভারেস্টে আরোহণের মৌসুমে পর্বতারোহীর সংখ্যা কিছুটা কমে গেছে। মূলত এপ্রিল-মে মাসেই শত শত পর্বতারোহী নেপালে পাড়ি জমায় এভারেস্টে উঠার লক্ষ্যে। গত বছর এভারেস্টে উঠেছে সাড়ে চারশোর মতো মানুষ এর মধ্যে আড়াইশোর বেশি বিদেশি নাগরিক। বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু পর্বত মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় আরোহণ না করেই অনেক পর্বতারোহী এ নিয়ে মিথ্যাচার করেন এমন অভিযোগ মাঝেমধ্যেই শোনা যায়।