গরমে কষ্ট হয় বলে ‘এয়ার কিন্ডশনার’ ছেড়ে আরামে ঘুম দেওয়ার কথা ভাবছেন! তবে শুধু আরামের কথা ভাবলেই হবে? ক্ষতির কথাটাও মাথায় রাখুন।
স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, শপিং মল, অফিস, ব্যক্তিগত গাড়ি সবখানেই আছে এয়ার-কন্ডিশনার (এসি) বা শীততাপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র। আর প্রচণ্ড গরমের সুবাদে আজকাল মধ্যবিত্ত, উচ্চ মধ্যবিত্তের ঘরেও শোভা পায় যন্ত্রটি। দিনের বেশিরভাগ সময় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকায় গরম থেকে বাঁচলেও স্বাস্থ্যের তা পুরোপুরি মঙ্গলজনক নয়।
এসি চালিয়ে ঘুমালে শরীরের উপর তিনটি ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্যবিষয়ক এক ওয়েবসাইট।
তাজা বাতাসের অভাব: এসি চালানোর আগে আমরা ঘরের সকল দরজা-জানালা বন্ধ করে নেই। আর শহরের নয়া ভবনগুলোতে আজকাল ‘ভেন্টিলেটর’ সচরাচর চোখে পড়ে না। ফলে এসময় ঘরে বাইরের তাজা বাতাস প্রবেশ করতে পারে না।
অতিরিক্ত ঠাণ্ডা: এসি চালিয়ে ঘুমিয়ে পড়লে রাতে ঘর অতিরিক্ত ঠাণ্ডা হয়ে যায়। যা শরীরের সহ্যের বাইরে চলে যেতে পারে।
শুষ্ক বাতাস: এসি বাতাসের আর্দ্রতা শুষে নেয়। পাশাপাশি আমাদের শরীরের আর্দ্রতাও।
এই তিনটি ঘটনা আমাদের শরীরের উপর নানান প্রভাব ফেলে।
- তাজা বাতাসের অভাবে অবসাদ জেঁকে বসতে পারে। প্রতিনিয়ত যারা দীর্ঘসময় এসি ঘরে কাটান, তাদের শরীরের বাসা বাঁধতে পারে ‘সিক বিল্ডিং সিনড্রোম’। সবসময় অবসাদগ্রস্ত ও ক্লান্ত থাকাই হল ‘সিক বিল্ডিং সিনড্রোম’য়ের লক্ষণ।
আর এসির বায়ুবাহী পাইপগুলো পরিষ্কার না থাকলে, দেখা দিতে পারে শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা। কারণ এই এসি হতে পারে ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া ও অন্যন্যা বায়ুবাহী সমস্যার সরবরাহকারী।
- নিম্ন তাপমাত্রায় মাংসপেশির সংকোচন, মাথাব্যথা, পিঠব্যথা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর তাপমাত্রা শরীরের সহ্য ক্ষমতার বাইরে চলে গেলে গিটে ও মাংসপেশিতে ব্যথা হয়। যা ভবিষ্যতে বাতের ব্যথায় পরিণত হতে পারে।
- বাতাস ও ঘরে থাকা মানুষের ত্বক থেকে আর্দ্রতা শুষে নেয় এসি। তখন ত্বক হয়ে যায় শুষ্ক। আর্দ্রতা হারানোর কারণে ত্বক তার স্থিতিস্থাপকতা হারায়। ফলে চামড়া টানে। যেখান থেকে ত্বকে বলিরেখা ও ভাঁজ পড়ার সম্ভাবনা বাড়ে। ফলে বয়সেই আগেই পড়ে বয়ষ্কছাপ। এছাড়াও দেখা দিতে পারে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা।
চোখ থেকেও আর্দ্রতা শুষে নিতে পারে এই যন্ত্র। ফলে চোখ লাল হয়ে থাকে এবং দৃষ্টি ঘোলাটে হয়ে যায়।
সর্দিগরমি: ঠাণ্ডা ঘর থেকে হঠাৎ বাইরের গরম আবহাওয়ায় যাওয়া শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকর। এই আকস্মিক তাপমাত্রার পরিবর্তনের সঙ্গে দ্রুত খাপ খাওয়াতে পারে না দেহ। ঠাণ্ডা গরমের এই দ্রুত পরিবর্তনের ফলে হয়ে যায় সর্দিগরমি। এছাড়াও ক্লান্তি বোধ হয়। আর ত্বকেরও ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাও বাড়ে।