কুমিল্লায় মুক্তিপণের দাবিতে এক প্রবাসীকে হত্যার দায়ে এক নারীসহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।
কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক নূর নাহার বেগম শিউলী বুধবার এ আদেশ দেন।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন- কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মানিকপুর গ্রামের মৃত তোতা মিয়ার ছেলে পলাতক আসামি শিপন মজুমদার ওরফে রিপন (২২), একই উপজেলার আটগ্রামের ছিদ্দিকুর রহমানের ছেলে সাহাবুদ্দিন (২২) এবং নগরীর চাঁনপুর বউ বাজার এলাকার মো. খোকন মিয়ার স্ত্রী তাসলিমা ওরফে সালমা (২৬)।
মামলার বিবরণে জানা যায়, প্রবাসী শামসুল হুদার কাছে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করায় চৌদ্দগ্রাম উপজেলার লতিফ শিকদার গ্রামের মৃত পেয়ার আহম্মেদের ছেলে মো. জসিম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। পরবর্তীতে দাবিকৃত মুক্তিপণের টাকা দিতে অস্বীকার করায় ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর কুমিল্লা হাউজিং স্টেট এলাকায় বিবর্তন নামক বিল্ডিংয়ের পঞ্চম তলায় প্রবাসী শামসুল হুদাকে গ্রিলের সঙ্গে হাত-পা বেঁধে জবাই করে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় ওই বছরের ১৬ ডিসেম্বর কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন মৃত শামসুল হুদার বড় ভাই। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জসিম উদ্দিন মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে প্রথমে নগরীর চাঁনপুর বউ বাজার এলাকার মো. খোকন মিয়ার স্ত্রী তাসলিমা ওরফে সালমাকে আটক করেন। পরবর্তীতে তাসলিমার তথ্য অনুসারে চৌদ্দগ্রাম মিয়ার বাজারের একটি হোটেল থেকে অপর দুই আসামি শিপন মজুমদার ওরফে রিপন ও সাহাবুদ্দিনকে আটক করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। পরবর্তীতে তিন আসামিই আদালত থেকে জামিন পান।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন ২০১৪ সালের ১০ মে আসামি শিপন মজুমদার, সাহাবুদ্দিন ও তাসলিমার বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। পরবর্তীকালে মামলাটি বিচারে এলে ১৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে শিপন মজুমদার (পলাতক), সাহাবুদ্দিন ও তাসলিমার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এপিপি সৈয়দা রেখা এবং আসামিপক্ষে ছিলেন ইকরামুল হক ও নাইমা সুলতানা মুন্নী।