ভারতের একটি দ্রুত বিচার আদালত ২০১৩ সালে ওই চার আসামির ফাঁসির রায় দিলে পরের বছর হাই কোর্টেও তা বহাল থাকে।
চার আসামি অক্ষয় ঠাকুর, বিনয় শর্মা, পবন গুপ্ত ও মুকেশ ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন। কিন্তু ভারতের সুপ্রিম কোর্ট শুক্রবার চূড়ান্ত রায়ে বলেছে, ওই চার অপরাধীর মৃত্যুদণ্ডই প্রাপ্য।
মেয়েটির বাবাকে উদ্ধৃত করে এনডিটিভি লিখেছে, “এদের ফাঁসিতে ঝোলাতেই হবে। তারা যা করেছে, তার মত বর্বর অপরাধ আর হয় না।”
২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাতে সিনেমা দেখে বন্ধুর সঙ্গে ফেরার সময় চলন্ত বাসে ধর্ষণের শিকার হন ২৩ বছর বয়সী ফিজিওথেরাপির ওই ছাত্রী। ছয় পাষণ্ড ধর্ষণের আগে ছাত্রীর বন্ধুকে পিটিয়ে হাত-পা বেঁধে ফেলে রাখে। পরে তাদের দুজনকেই চলন্ত বাস থেকে ফেলা দেওয়া হয়।
এর দুই সপ্তাহ পর মারাত্মক আহত ওই ছাত্রী সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
ওই ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় ভারতজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে, ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে আন্দোলন শুরু করে ছাত্র-জনতা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম মেয়েরটি নাম দেয় ‘নির্ভয়া’।
এই বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটে নারীর সুরক্ষা নিয়ে জাতীয় পর্যায়েও বিতর্ক তৈরি হয়। প্রবল বিতর্কের মুখে আইন সংশোধন করে নারী নির্যাতনের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান করা হয়।
মামলায় অভিযুক্ত ছয়জনের মধ্যে প্রধান আসামি বাসচালক রাম সিং কারাগারে মারা যান। পরে তার নাম মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়।
এছাড়া দোষী সাব্যস্ত আরেক অপরাধী সে সময় অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় কিশোর অপরাধীদের জন্য প্রযোজ্য আইন অনুযায়ী ২০১৫ সালে তাকে তিন বছরের জন্য সংশোধনাগারে পাঠায় আদালত। আইন অনুযায়ী সেটাই ছিল অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য সর্বোচ্চ সাজা।
সাজা কাটিয়ে ২০১৫ সালে সেই তরুণ মুক্তি পেলে নতুন করে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এরপর ধর্ষণের মত গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সীদেরও ‘প্রাপ্তবয়স্ক’ বিবেচনা করে বিচারের আইন হয় ভারতে।
মৃত্যুদণ্ডের চার আসামির সাজা সুপ্রিম কোর্টেও বহাল থাকায় এখন তাদের সামনে কেবল রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ থাকবে।