রাজধানীর গুলশানে পুলিশের শটগান থেকে বের হওয়া ছররা গুলিতে আহত হয়েছেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সচিব ও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহেদুল খবির চৌধুরী। গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে গুলশান-২ নম্বরে ওয়েস্টিন হোটেলের সামনের রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিত্সকরা। এ ঘটনায় কর্তব্যরত দুই কনস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তারা হলেন মিরপুরে পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টে (পিওএম) কর্মরত কনস্টেবল ইমরান ও আশরাফুল। ঘটনাটি তদন্তে গুলশান জোনের সহকারী কমিশনারকে (টহল) রেজাউল কবিরকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার মোশতাক আহমেদ। গুলিবিদ্ধ শাহেদুল খবির চৌধুরীর সহকর্মীরা জানান, শাহেদুলের বাড়ি চট্টগ্রামে। তিনি অবিবাহিত। বকশীবাজারে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কোয়ার্টারে তিনি থাকেন। গত বৃহস্পতিবার তার এলাকার বন্ধুদের নিয়ে ওয়েস্টিন হোটেলে একটি ডিনার পার্টির আয়োজন করেন। ডিনার পার্টি শেষে রাত ১০টার দিকে ওয়েস্টিন হোটেল থেকে তিনি বের হন। সিএনজি অটোরিকশা অথবা গাড়ি ভাড়া করতে তিনি গুলশান-২ নম্বরের দিকে যাচ্ছিলেন। তখন রাস্তার পাশে দায়িত্ব পালন করছিল পুলিশের একটি দল।
হঠাৎ তাদের একজনের শটগানের ট্রিগারে ভুলে চাপ পড়ে ছররা গুলি বেরিয়ে আসে। শাহেদুলের হাত, পা, বুক, পিঠ ও ঊরুসহ শরীরের ১৯ স্থানে স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়েছে। গুলশান থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক জানান, ঘটনাটি ছিল ‘মিস ফায়ার’ (অসতর্কতাবশত গুলি বের হওয়া)। এজন্য দায়ী দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গতকাল সকালে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান হাসপাতালে শাহেদুলকে দেখে এসে সাংবাদিকদের জানান, তিনি ভালো আছেন। পুলিশ কর্মকর্তারাও তাকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। তারা বলেছেন, এ ঘটনায় তারা বিব্রত। দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছেন তারা। এছাড়া শাহেদুলের চিকিত্সার খরচও পুলিশের পক্ষ থেকে পরিশোধ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। শাহেদুলকে দেখতে গতকাল মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন হাসপাতালে গিয়েছিলেন বলেও জানান অধ্যাপক মাহবুবুর। আহত শাহেদুল খবির চৌধুরী গতকাল বলেন, সবগুলো স্প্লিন্টার বের না হলেও ডাক্তাররা জানিয়েছেন তিনি বিপদমুক্ত। আজ আবারও তার শারীরিক অবস্থা পরীক্ষার পর হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন চিকিত্সকরা।