নিজ সংবাদ : কুষ্টিয়ার ইবি থানার মধুপুর গ্রামের ভূমিহীন ও ভ্যান চালক হতদরিদ্র সোহরাব উদ্দিনের ১০বছরের ছেলে নিশান হাসান। সে স্থানীয় হাসানবাগ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ালেখা করে। বাবা ভ্যান চালিয়ে সংসার চালালেও কিছুদিন ধরে সে অসুস্থ। তাই আর ভ্যান চালানোর সক্ষমতা না থাকলেও ভ্যানের চালকের আসনে তার শিশু সন্তানকে দিয়েছে এবং ভ্যানের পিছন থেকে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছিলো সোহরাব উদ্দিন। সেই শিশু নিশান হাসানকে দিয়ে ভ্যান চালিয়ে সংসারের উপার্জন করতে হচ্ছে। বিষয়টি এক পুলিশ কর্মকর্তার চোখে পড়লে তাৎক্ষনিক গাড়ী থামিয়ে সেই শিশুকে জিজ্ঞেস করলেন কেন তুমি ভ্যান চালাচ্ছো। তখন বাবার অসুস্থ্যতার কথা এবং অর্থের অভাবে স্কুলে পড়ালেখা করা সম্ভব নয় বলে জানালে পুলিশ কর্মকর্তা তার সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেন। তার পড়ালেখা এবং তার বাবার চিকিৎসা বাবদ অর্থ সহযোগীতা করেন পুলিশের ঐ কর্মকর্তা। সেই পুলিশ কর্মকর্তার নাম মো: শহীদুল্লাহ। তিনি কুষ্টিয়ার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সদর) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জানান, সোমবার দুপুরে যশোর থেকে ভিভিআইপি’র দায়িত্ব পালন শেষে সড়কপথে কুষ্টিয়ায় নিজ কর্মস্থলে ফিরছিলাম। পথিমধ্যে ইবি থানার মধুপুর পাকা রাস্তায় এসে পৌঁছালে দেখি শিশু নিশান হাসান মালামাল বোঝাইকৃত ভ্যান চালিয়ে রাস্তায় তোলার চেষ্টা করছেন আর তার বাবা ভ্যানের পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় নেওয়ার চেষ্টা করছেন। দৃশ্যটি আমার মনকে নাড়া দিলো। পরে আমি গাড়ী থেকে নেমে গিয়ে তার সাথে কথা বলে পুরো বিষয়টি জেনে আমি আমার সামর্থমতো অর্থ সহযোগীতা করলাম। তিনি বলেন, আমাদের চোখের সামনে এরকম পথশিশুরা যেন এভাবে লেখাপড়া নষ্ট করে পথে না নামে সে বিষয়টি আমাদের সবার লক্ষ্য রাখা দরকার। আমরা যার যার জায়গা থেকে যদি একটা সহানুভুতি এবং সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেই তাহলে হয়তোবা অনেক সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা উপকৃত হবে। শুধু নিশান হাসান নয়, এই পুলিশ কর্মকর্তা এর আগের অসংখ্য এমন মহত কাজ করেছেন। ছুটে গেছেন অসহায় দরিদ্র মানুষের কাছে।খোজ নিয়েছেন পরিবারের। পুলিশের মধ্যে অনেক বিতর্ক থাকেলেও তার মত এমন পুলিশ কর্মকর্তার মহত উদ্যোগের কারনে পুলিশের ভাবমুর্তি উজ্জ্বল হচ্ছে।
এসএম জামাল, কুষ্টিয়া থেকে।