ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের এক মুসলিম যোগব্যায়াম শিক্ষিকাকে লাগাতার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তিনি মুসলমান হয়েও কী করে যোগব্যায়াম শেখাচ্ছেন, সে কারণে তাকে হুমকি শুনতে হচ্ছে। হুমকির কারণে তাঁর বাড়িতে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে পুলিশ। রাজধানী শহর রাঁচির বাসিন্দা ওই শিক্ষিকা রাফিয়া নাজ স্নাতোকত্তর পড়ছেন। অনেক দিন ধরেই অনাথ শিশুদের যোগব্যায়াম শেখান। রাফিয়া নাজ জানান, "বছর তিনেক ধরেই হুমকি চলছিল, কিন্তু এখন সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গেছে। বাড়িতে লোকে পাথর ছুঁড়েছে কয়েকদিন আগে। আর তারপরে বাড়ির চারদিকে অনেক পুলিশ দেওয়া হয়েছে, সিসিটিভি লাগানো হয়েছে। মনে হচ্ছে জেলে বন্দি হয়ে আছি আমরা।" হুমকির ঘটনা লিখিতভাবে পুলিশকে জানান নি রাফিয়া কারণ "অভিযোগ দায়ের করলেই কোর্ট-কাছারী করতে হবে। আমি সাধারন পরিবারের মেয়ে - কে করবে ওইসব!" অভিযোগ না জানালেও রাঁচির সিনিয়র পুলিশ সুপারিন্টেডেন্ট কুলদীপ দ্বিবেদী বিষয়টা জানতে পেরেই নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছেন। তাঁর নিরাপত্তার ব্যাপারে খোঁজখবর রাখছেন পুলিশ প্রশাসনের বড়কর্তারাও। রাফিয়া নাজ বলেন, "বিশ্ব যোগ দিবসকে কেন্দ্র করে আমার ব্যাপারে সংবাদপত্রে ছাপা হয়েছিল। তখন থেকেই কলেজে হুমকি দেওয়া শুরু হয়। তারপরে বাবা রামদেবের সঙ্গে মঞ্চেও আমি যোগব্যায়াম প্রদর্শন করেছি। নিয়মিতই ফোন করে বলা হয় যে আমি মুসলিম হয়েও কী করে পুরুষদের যোগব্যায়াম করাই। অথচ আমি অনাথ আশ্রমের শিশুদের যোগ শেখাই।" কারা হুমকি দিচ্ছে তাঁকে, সেই বিষয়ে প্রশ্ন করলে রাফিয়া জানিয়েছেন, "কারও নাম নিতে চাই না, তবে হিন্দু-মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের লোকই আছে তাদের মধ্যে। পুলিশ জানতে চেয়েছিল বলে তাদের বলেছি। অনেক কল রেকর্ডও দিয়েছি পুলিশকে।" চার বছর বয়স থেকে যোগ ব্যায়াম করেন রাফিয়া নাজ। নানা যোগ প্রদর্শনী করার কারণে কলেজেও যথেষ্ট জনপ্রিয় তিনি। কলেজের ভোটে লড়ার সময় থেকেই তাঁর যোগ ব্যায়াম করার জন্য একটি মহল থেকে দুর্নাম ছড়ানো শুরু হয় বলে রাফিয়ার অভিযোগ।
সূত্র: বিবিসি বাংলা