মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমান বিদ্রোহীদের সংস্থা আরসা একতরফা ভাবেই এক মাসের অস্ত্রবিরতির ঘোষণা দিয়েছে। রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) থেকে এই অস্ত্রবিরতি কার্যকর হতে যাচ্ছে। এক বিবৃতিতে বিদ্রোহীরা বলছে, তারা রাখাইনে মানবিক সংকট বিবেচনায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং তারা আশা করছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীও সেখানে অস্ত্রবিরতি করবে। এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে এর আগে মিয়ানমারের একজন মন্ত্রী বিবিসিকে বলেছেন, রাখাইনে সহিংসতার কারণে যেসব রোহিঙ্গা মুসলমান মিয়ানমার ছেড়ে পালিয়ে গেছে, তাদের সবাইকে দেশে ফিরতে দেয়া হবে না। আরসা বা আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) দেয়া এক বিবৃতির মাধ্যমে অস্ত্রবিরতির এই ঘোষণা দেয়। গত ২৫ অাগস্ট পুলিশের উপর এই আরসার চালানো হামলার প্রতিক্রিয়াতেই রাখাইনে সেনা অভিযান শুরু হয়, যার কারণে প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গা মুসলমান প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়। শরণার্থীর স্রোত এখনো অব্যাহত আছে। বহু রোহিঙ্গা নিহত হচ্ছে। সীমান্তের দুপাড় জুড়েই তৈরি হয়েছে এক মানবিক পরিস্থিতি। এরকম পরিস্থিতিতেই আরসা'র তরফ থেকে এলো একতরফা অস্ত্রবিরতির ঘোষণা। তারা সাহায্যকারী সংস্থাগুলোতে রাখাইন এলাকায় তাদের কর্মকাণ্ড শুরু করবারও আহ্বান জানিয়েছে। অবশ্য রাখাইনের সহিংসতা প্রসঙ্গে মিয়ানমারের সরকারের বক্তব্য তাদের ভাষায়, রোহিঙ্গা জঙ্গি এবং মুসলমান গ্রামবাসীরা নিজেরাই নিজেদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে এবং অমুসলিমদের উপর হামলা চালাচ্ছে। এদের অনেকেই সহিংসতা থেকে বাঁচতে পালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বিবিসির একজন সংবাদদাতা গত বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাখাইনে গিয়ে দেখেছেন সেখানে একটি মুসলমান গ্রাম জ্বলছে, যেটিতে অগ্নিসংযোগ করেছে রাখাইনের একদল বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। এই ঘটনাটি রাখাইনে চলমান সহিংসতা সম্পর্কে মিয়ানমারের সরকারী বক্তব্যের সঙ্গে সুস্পষ্টভাবে সাংঘর্ষিক।