মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯শে অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Smoking
 
সদ্যবিদায়ী অর্থবছরে বিক্রি হয়েছে ৪৬ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র
প্রকাশ: ০৯:৪৪ am ০৫-০৭-২০১৭ হালনাগাদ: ০৯:৪৭ am ০৫-০৭-২০১৭
 
 
 


সুদের হার কমিয়ে দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তাই হু হু করে বাড়ছে সঞ্চয়পত্র বিক্রি। সদ্যবিদায়ী অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) বিক্রি হয়েছে ৪৬ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র। একক মাস হিসাবে মে মাসে বিক্রির পরিমাণ ৪ হাজার ৫৭১ কোটি টাকা। অথচ সংশোধিত বাজেটে বিক্রি লক্ষ্য নির্ধারণ হয় ৪৫ হাজার কোটি টাকা। অর্থাত্ অর্থবছরের ১১ মাসেই লক্ষ্য থেকে বিক্রি বেশি হয়েছে ১ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র। জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। অর্থবছর শেষে সঞ্চয়পত্র বিক্রি ৫০ হাজার কোটি টাকা ছাড়াতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যেহেতু বিক্রির ক্ষেত্রে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই, তাই বিক্রি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, প্রতিবছরই বাজেটে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়, বছর শেষে তা ছাড়িয়ে যায়। এক্ষেত্রে বিক্রিতে কোনো বিধিনিষেধ দেওয়া হয় না বলে জানান তিনি। উচ্চ মুনাফা আর কোনো সুবিধাজনক উত্স না থাকায় সঞ্চয়পত্রে ঝুঁকছে মানুষ। সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের জন্য সবখানেই ভিড়। বর্তমানে সঞ্চয়পত্র কেনায় দীর্ঘ লাইন দেখা যাচ্ছে। মূলত ব্যাংক আমানতের চেয়ে সঞ্চয়পত্রে সুদহার বেশি হওয়ায় লাফিয়ে বাড়ছে বিক্রি। এই ব্যবস্থায় বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো তদারকি ব্যবস্থা না থাকায় বিক্রি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, মেয়াদি আমানতে সরকারি ব্যাংকগুলো এখন সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ সুদ দিচ্ছে। অধিকাংশ ব্যাংকের সুদহার প্রায় একই রকম। সব মিলিয়ে গত এপ্রিলে ব্যাংকগুলোর আমানতের গড় সুদহার নেমে এসেছে ৪ দশমিক ৯৭ শতাংশে। অথচ সঞ্চয়পত্রে টাকা খাটিয়ে সুদ পাওয়া যাচ্ছে দ্বিগুণেরও বেশি। ফলে সঞ্চয়পত্র বিক্রি ব্যাপক হারে বেড়ে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হচ্ছে। এদিকে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমছে, এটা এখন নিশ্চিত প্রায়। কিন্তু কী পরিমাণ কমবে সুদ-এটাই জানানোর বাকি। অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, ১৫ জুলাইয়ের পরই এ বিষয়ে একটি ঘোষণা আসতে পারে। সেদিন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সঞ্চয়পত্র সংক্রান্ত কমিটির সঙ্গে বসে দিকনির্দেশনা দেবেন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা আর সেই নির্দেশনানুযায়ী কাজ করবে কমিটি। গত ২৯ জুন ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট পাসের দিন সংসদে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমছে সেই ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি এও বলেছেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষার জন্য কী করা যায়, সেটাও দেখছেন তারা। কিন্তু এ নিয়ে আর এরপর কোনো কথা হয়নি। সরকার বাজেট ঘাটতি মোকাবেলায় যেসব কৌশল হাতে নেয়, তার একটি সঞ্চয়পত্র বিক্রি। জনগণের কাছ থেকে নির্ধারিত সুদে টাকা তোলা হয় এই সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে। ব্যাংক সুদের হার বেড়ে গেলে সঞ্চয়পত্রের দিকে জনগণের ঝোঁক কমে, আর ব্যাংক সুদের হার কমলে এই ঝোঁক বাড়ে। গত কয়েক বছর ধরে ব্যাংকের সুদের হার কমতে কমতে এখন তা পাঁচ শতাংশের নিচে রয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্রের সুদের হার এখন ১১ শতাংশের বেশি। আর ব্যাংকের তুলনায় দ্বিগুণ সুদ পাওয়া যায় বলে মানুষ ব্যাপকহারে সঞ্চয়পত্র কিনছে। আর এ কারণে সরকারের লক্ষ্যমাত্রার কয়েকগুণ সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। ফলে সরকারের সুদ ব্যবস্থাপনায় সমস্যার তৈরি হয়েছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, মূলত ব্যাংক ব্যবস্থায় সুদের হার কমার কারণে সঞ্চয়পত্রের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। কাজেই সঞ্চয়পত্র থেকে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ঋণ গ্রহণ করতে হচ্ছে। ফলে সুদ বাবদ ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এতে সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনার ওপর চাপ তৈরি হচ্ছে। এই বাস্তবতার বিষয়টি আমি উত্থাপন করেছি। আগামী অর্থবছরের বিশাল আকারের বাজেটের অর্থায়নের জন্য অর্থমন্ত্রী এবার ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের ঘোষণা দিলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুরোধে তা দুই বছর পিছিয়ে দিয়েছেন। আবার ব্যাংক হিসাবে আবগারি শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত থেকেও কিছুটা পিছু হটতে হয়েছে।

 

 

 
 

আরও খবর

Daraz
 
 
 
 
 
 
 
 
©ambalanews24.com | Developed & Maintenance by AmbalaIT