ঢাকায় স্কুলছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশা হত্যা মামলায় একমাত্র আসামি ওবায়দুল খানের বিচার শুরু করেছে আদালত।
আসামি ওবায়দুল খানকে এদিন আদালতে হাজির করার পর তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পড়ে শোনানো হয়।
ওবায়দুল এ সময় নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চান। রিশার মা তানিয়া হোসেনও এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
বিচারক পরে অভিযোগ গঠন করে ওবায়দুলের বিচার শুরুর নির্দেশ দেন।
রিশার মায়ের পক্ষে এ মামলা লড়ছেন মহিলা আইনবীবী সমিতির ফাহমিদা আক্তার রিংকি।
পঞ্চদশী রিশা কাকরাইলের উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। বাবা রমজান হোসেন ও মা তানিয়া হোসেনের সঙ্গে পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজারের এক বাসায় থাকত সে।
গত বছর ২৪ আগস্ট স্কুলের সামনের ফুটওভার ব্রিজের উপরে তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। চার দিন পর হাসপাতালে রিশার মৃত্যু হলে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের শিক্ষার্থীরা। টানা কয়েকদিন তারা সড়কে বিক্ষোভ-মানববন্ধনের মতো কর্মসূচি পালন করে।
আসামি ওবায়দুল খান (২৯) এলিফ্যান্ট রোডের ইস্টার্ন মল্লিকা শপিং কমপ্লেক্সের বৈশাখী টেইলার্সের কাটিং মাস্টার ছিলেন। রিশার ওপর হামলার এক সপ্তাহ পর ৩১ অগাস্ট নীলফামারীর ডোমার উপজেলার সোনারায় বাজার থেকে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পাশের জেলা দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার মিরাটঙ্গী গ্রামেই ওবায়দুলের বাড়ি।
হামলার ঘটনার পরদিন রিশার মা তানিয়া রমনা থানায় একটি হত্যাচেষ্টার মামলা করেছিলেন, যা পরে হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ওই ঘটনার প্রায় ছয় মাস আগে মায়ের সঙ্গে বৈশাখী টেইলার্সে গিয়েছিল রিশা। এর পর থেকে ওবায়দুল প্রায়ই তাকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন।
প্রথমে ফোনে এবং পরে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে সাড়া না পেয়ে ওবায়দুল স্কুলছাত্রী রিশাকে ছুরিকাঘাত করেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
রমনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আলী হোসেন তদন্ত শেষে গত বছরের নভেম্বরে ওবায়দুলের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। ওবায়দুল ছুরিকাঘাতের কথা স্বীকার করে হাকিম আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে অভিযোগপত্রে।
সেই অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে গত ২২ মার্চ ঢাকার মহানগর দায়রা জজ মো. কামরুল হোসেন মোল্লা অভিযোগ গঠনের শুনানির তারিখ ঠিক করে মামলাটি অষ্টম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠিয়ে দেন।