বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ছাত্রীদের আবাসিক বেগম রোকেয়া হল থেকে প্রথম বর্ষের এক নবীন ছাত্রীকে বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। ঘটনার প্রতিবাদে ভুক্তভোগী আফসানা আহমেদ ইভা নামের ওই শিক্ষার্থী মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে হলের গেটের সামনে আমরণ অনশন শুরু করে।
আফসানা আহমেদ ইভা অভিযোগ করে বলেন, গত ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচিতে যাওয়ার অস্বীকৃতি জানালে ওইদিন রাতে হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাকে আলাদাভাবে রুমে ডেকে পাঠায়। এসময় তারা বলে, প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ছাত্রলীগের সকল কর্মসূচিতে যাওয়া বাধ্যতামূলক। প্রস্তাবটিতে রাজি না হওয়ায় তারা আমাকে হল থেকে বের করে দেয়া ও আমার জিনিসপত্র পুড়িয়ে ফেলার হুমকি দেয়া হয়। বিষয়টি হল প্রভোষ্টকে জানালে তিনি কোনো ব্যবস্থা নেন নি।
ওই ঘটনার জের ধরে ৮ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১১ টায় হলের আয়াদের দিয়ে আমার জিনিসপত্র হলের বাইরে রেখে আসে। এদিকে হল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত না করে আমাকে হলের সম্প্রসারিত ভবনে চলে যেতে বলে। কিন্তু আমি যেতে না চাইলে প্রভোষ্ট আমার দায়িত্ব নিতে অস্বীকৃতি জানায়। সকাল পর্যন্ত আমি সমাধান না পাওয়ায় আমি অনশন করছি।
আফসানা আরও অভিযোগ করে বলে, ঘটনাটি প্রভোষ্ট ম্যামকে জানালে তিনিও আমাকে ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে অংশ নিতে বলেন। এদিকে হলের ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তানিয়া আফরিন সিনথীর নেতৃত্বে ইলা, শিলা, স্বর্ণাসহ প্রায় অর্ধশতাধিক ছাত্রী আফসানাকে হল থেকে বের করে দেয়ার দাবিতে মানববন্ধন করে।
জানা যায়, সকাল ৯টার দিকে আফসানা অনশনে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান খোকন সকাল ১০টায় তাকে প্রক্টর কার্যালয়ে নিয়ে আসে। কিন্তু কোনো সমাধান না পাওয়ায় আফসানা অনশন কর্মসূচি অব্যাহত রাখে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. জাকির হোসেন, সহকারি প্রক্টর, হলের হাউজ টিউটর আফসানাকে হলের ভেতর নিয়ে যায়। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে নিজ সিটে থাকার বিষয়ে আশ্বাস দিলে আফসানা অনশন ভাঙ্গে।
এ বিষয়ে রোকেয়া হলের প্রভোষ্ট অধ্যাপক ড. ইসমত আরা বেগম আফসানার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিষয়টির তদন্ত শেষে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হলে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক গেষ্টরুম, শো ডাউন করানো হয় বলে জানা যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাকৃবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ রুবেল বলেন, ঘটনাটি সত্য নয়। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের দেশের সঠিক ইতিহাস জানানোর জন্য গেষ্টরুম করানো হয় যাতে ভবিষ্যতে নবীন শিক্ষার্থীরা দেশের কাজে অবদান রাখতে পারে।