সঞ্জয় লীলা বানসালি পরিচালিত 'পদ্মাবতী' ছবির মুক্তি আটকাতে শ্রী রাজপুত করণী সেনা আগামী ১ ডিসেম্বর ভারত বন্ধের ডাক দিয়েছেন। এবার আবার আরো এক ধাপ এগিয়ে ছবির অভিনেত্রী দিপীকা পাড়ুকোনের নাক কাটার হুমকি দিয়েছে তারা। পরিচালক সঞ্জয়ের মাথার দামও নির্ধারণ করে ফেলেছে মেরঠের একটি সংগঠন। ছবিতে রাজপুতদের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে বলে শুটিং পর্ব থেকেই নানা গোলমাল বাধিয়ে এসেছে করণী সেনা। চলতি বছরের জানুয়ারিতে জয়পুরে ছবির সেটে ভাঙচুর চালিয়ে শুটিংয়ের বহুমূল্য সামগ্রী নষ্ট করে দেয়। পরিচালক সঞ্জয় লীলা বানসালিকে মারধরও করা হয়। সে সময় ছবির শ্যুটিং সাময়িক ভাবে বন্ধ করতে বাধ্য হন সঞ্জয়। পরবর্তীতে ছবির পোস্টার আর ট্রেলার মুক্তিকে কেন্দ্র করে ভারতের বিভিন্ন এলাকায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়া রানি পদ্মাবতীর নাচের দৃশ্য নিয়ে আপত্তি উঠেছে বহু জায়গায়। সবচেয়ে বড় আপত্তির জায়গা হল আলাউদ্দিন খিলজির সঙ্গে রানি পদ্মাবতীর ঘনিষ্ঠ স্বপ্ন দৃশ্য। ছবিতে এমন কোনও দৃশ্য নেই বলে বারবার জানিয়েছিলেন পরিচালক নিজে। কিন্তু তাতে বিক্ষোভ-আন্দোলন থামানো যায়নি। এই অবস্থায় আগামী মাসের ১ তারিখ ছবিটির মুক্তি আটকাতে মরিয়া করণী সেনাসহ বেশ কয়েকটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। ছবি মুক্তি নিয়ে আজ আপত্তি তুলেছেন অজমের দরগার দেওয়ান জইনুল আবেদিন আলি খানও। একটি বিবৃতিতে বিতর্কিত লেখক সালমান রুশদির সঙ্গে সঞ্জয় লীলা বানসালির তুলনা করেছেন তিনি। একই দিনে হুমকি দেওয়া হয়েছে পরিচালক সঞ্জয় লীলা বানসালিকেও। মহারাষ্ট্র সরকার তাঁকে পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। মেরঠের রাজপুত সংগঠন তাঁর মাথার দাম ঘোষণা করেছে পাঁচ কোটি। ওখানকারই সর্ব ব্রাহ্মণ মহাসভা আবার ছবির মুক্তি আটকাতে রক্ত দিয়ে চিঠি লিখছে সেন্ট্রাল বোর্ড অব ফিল্ম সার্টিফিকেশন (সিবিএফসি)-কে। এই বিতর্কের মধ্যেই আবার ছবিটির মুক্তি পিছোতে চেয়ে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রককে চিঠি দিয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। রাজ্যের মুখ্যসচিব (স্বরাষ্ট্র) অরবিন্দ কুমার ওই চিঠিতে লিখেছেন, ১ তারিখ ছবিটি মুক্তি পেলে রাজ্যে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে। তাঁর ব্যাখ্যা, ওই দিন স্থানীয় একটি ভোটের গণনা রয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে মুসলিমদের বরাওয়াফত নামে এক উৎসব। এই দু’দিক সামলাতে গিয়ে হল মালিকদের যথেষ্ট নিরাপত্তা দেওয়া যাবে না বলেই মনে করছে রাজ্য সরকার। গত কয়েক দিনে ছবির ট্রেলার প্রদর্শনী ঘিরে বিভিন্ন শহরে যে ধরনের হাঙ্গামা হয়েছে, তাতে যোগী সরকার ভীত বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন অরবিন্দ কুমার। যথাযথ ব্যবস্থা না নিয়ে ওই রাজ্যে ছবিটি মুক্তি পেলে বড় ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা। সূত্র: আনন্দবাজার