মহররমের মাসে মুসলিমদের শোকের দিন আশুরায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন দিতে নিষেধ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুর্গা পূজার আয়োজক, মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতা ও অন্যান্য ধর্মীয় নেতাদের নিয়ে করা গত বুধবার এক বৈঠকে মমতা এ নির্দেশ দেন। এনডিটিভি। গত বছরের মতো এবারও আশুরা এবং প্রতিমা বিসর্জনের দিন কাছাকাছি পড়েছে। দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা এড়াতেই মমতার এই সিদ্ধান্ত। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিন্দু ধর্মীয় নেতা ও পূজা আয়োজকদের বলেন, চার দিনের পূজা শেষে ৩০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া যাবে। ১ অক্টোবর আশুরার দিনকে কেন্দ্র করে ওইদিন সন্ধ্যার পর থেকেই শিয়া সম্প্রদায়ের তাজিয়া মিছিল বের হওয়ার কথা। মহররমের অনুষ্ঠান উপলক্ষে ৩০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা থেকে ১ অক্টোবর রাত পর্যন্ত প্রতিমা বিসর্জন বন্ধ থাকবে। পরদিন থেকে ফের বিদায় জানানো যাবে দুর্গাকে। ধর্মীয় অনুভূতিকে উসকে দিয়ে কেউ কেউ রাজনীতি করতে চায় বলেও বৈঠকে সতর্ক করেন তৃণমূল প্রধান মমতা। কিছু মানুষ আছে যারা হিন্দু-মুসলমান বিষয়ে সমস্যা সৃষ্টি করতে চেষ্টা করছে। প্রত্যেকটি ধর্মই আমাদের; যদি পূজামণ্ডপের পাশ দিয়ে আশুরার মিছিল যাওয়ার সময় সমস্যা বাধে, তাহলে আমরা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হব, বলেন তিনি। মমতার এই সিদ্ধান্ত তাত্ক্ষণিকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। সংখ্যালঘুদের খুশি করতেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেও অনেকের মন্তব্য। মমতার সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় ফেসবুকে বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ প্রধান দিলীপ ঘোষ বলেন পশ্চিমবঙ্গ কি ধীরে ধীরে তালেবানি শাসনের দিকে যাচ্ছে? স্কুলে সরস্বতী পূজা বন্ধ, দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনে ধারাবাহিকভাবে বাধা দেওয়া হচ্ছে, বাংলা ভাষায় উর্দু-আরবি শব্দ প্রবর্তনের চেষ্টা হচ্ছে; ‘আব্বা’, ‘আম্মা’, ‘আসমানি’-এসবই এর প্রমাণ। এরপর আমরা ‘দিদিমণি’কে (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) ‘আপা’ ডাকতে পারি। বাংলার জনগণ কতদিন এগুলো সহ্য করবে? গত বছরও আশুরা উপলক্ষে প্রতিমা বিসর্জনের সময় বেঁধে দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার। যার বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে অভিযোগও জানিয়েছিল কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি। মহররমের অনুষ্ঠানের জন্য প্রতিমা বিসর্জনে সময় নির্ধারণের সিদ্ধান্তকে ‘বিধিবহির্ভূত’ অ্যাখ্যা দিয়ে তারা বলেছিল, ‘সংখ্যালঘুদের খুশি করতেই রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপ।