স্বাধীনতা দিবসের আমন্ত্রণপত্রে বিকৃত করে বঙ্গবন্ধুর ছবি ছাপানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া বরগুনা সদর উপজেলার সেই নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গাজী তারিক সালমনকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে আনা হয়েছে। তাকে জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব হিসেবে নিয়োগ দিয়ে সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
প্রজ্ঞাপনটিতে প্রশাসনের আরও সাত কর্মকর্তার দপ্তর বদল করা হয়েছে।
ট্যারিফ কমিশনের উপপ্রধান মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব, মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম আব্দুল্লাহ আল মামুনকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব এবং শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জের ইউএনও সোহেল আহমেদকে ত্রাণ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক মামুনকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব করা হয়েছে।
এছাড়া পটুয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আলমগীর হোসেনকে জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব করা হয়েছে।
একই প্রজ্ঞাপনে নাটোরের সিংড়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মুসফিকুর রহমানকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (সহকারী সচিব) করে বিসিএস প্রশাসন একাডেমীতে সংযুক্ত করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের (সংযুক্ত) সহকারী সচিব আকতার হোসেন খানকে একই মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব (ক্যাডার বহির্ভূত) করা হয়েছে।
তারিক সালমন বরিশালের আগৈলঝাড়ায় দায়িত্ব পালনের সময় স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে ছাপানো আমন্ত্রণপত্রে বঙ্গবন্ধুর বিকৃত ছবি ব্যবহার করেছেন-এমন অভিযোগে মামলা করেন বরিশাল আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও বরিশাল আওয়ামী লীগের সে সময়ের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ ওবায়েদ উল্লাহ সাজু। এই মামলায় গত ১৯ জুলাই তারিক সালমানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বরিশাল মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক আলী হোসাইন। পরে অবশ্য আদেশ পাল্টে তাকে জামিন দেয়া হয়।
যে ছবি নিয়ে এত হুলস্থুল সেটি গত ১৭ মার্চ আগৈলঝাড়ায় বঙ্গবন্ধুর জন্মদিকে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় এঁকে পুরস্কার পেয়েছিল শিশু অদ্রিজা কর। অথচ এই ছবি ব্যবহারের কারণে ইউএনওকে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছিলেন জেলা প্রশাসক গাজী মো. সাইফুজ্জামান।
তারিক সালমন জামিন পাওয়ার পর পুরো বিষয়টা সামনে চলে আসে এবং এই মামলায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর বাদী সাজুকে আওয়ামী লীগ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। মামলাও তুলে নেয়া হয়।
তারিক সালমনকে নিরাপত্তা নিতে ব্যর্থ হওয়ায় কপাল পুড়েছে তার সাবেক কর্মস্থল বরিশালের জেলা প্রশাসক গাজী মো, সাইফুজ্জামান এবং বর্তমান কর্মস্থল বরগুনার জেলা প্রশাসক মহা. বশিরুল আলমের। তাদেরকে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে প্রত্যাহার করে দুই জেলায় নতুন প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে সরকার।