কমনওয়েলথভুক্ত সদস্য দেশগুলোর মধ্যে অভিন্ন ভিসা পদ্ধতি চালুর বিষয়ে সুপারিশ গৃহীত হয়েছে। ৬৩তম কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারী এসোসিয়েশন (সিপিএ) সম্মেলনের আজ ৬ষ্ঠ দিনে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) ‘বাণিজ্য, ভিসা সমস্যা, ভ্রমণ ও ট্যারিফ বিধিনিষেধ : কমনওয়েলথ দেশসমুহের সংসদ সদস্যদের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় সংসদ সদস্যরা এ সুপারিশ গ্রহণ করেন।
কর্মশালার মডারেটর ছিলেন, কানাডার সংসদ সদস্য আলেকজান্দ্রা মেন্ডেজ। মূল আলোচক ছিলেন, নাইজেরিয়ার সিনেটর ইকে ই বেরেমাদু, যুক্তরাজ্যের লর্ড ডেভিস, গায়ানার এমপি জোসেফ এফ হারমান।
কর্মশালা শেষে বিআইসিসি মিডিয়া সেন্টারে মিডিয়া কমিটির সদস্য সংসদ সদস্য ফজিলাতুন নেসা বাপ্পি, সাগুফতা ইয়াসমীন এমিলি, পঙ্কজ দেবনাথ, তানভীর ইমাম এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন। এ সময় মালয়েশিয়ার এমপি ও কমনওয়েলথ ওমেন পার্লামেন্টারীয়ানদের চেয়ারপার্সন ড. নোরায়নী ও হেলেনা দীপপুঞ্জের এমএলসি ডেরেক থমাস এ সময় উপস্থিত ছিলেন। ফজিলাতুন নেসা বাপ্পি জানান, কর্মশালায় সুপারিশ গ্রহণ করা হয়েছে যে, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ন্যায় কমনওয়েলথভূক্ত দেশসমূহে অভিন্ন ভিসা পদ্ধতি, বাণিজ্য উন্নয়ন, আমদানী রপ্তানীর ক্ষেত্রে শুল্ক বিধিনিষেধ সহজীকরণ ও একই অভিন্ন ইন্টারেস্টে সকল সদস্যদেশ গুলোকে একত্রিত হয়ে কাজ করা। ‘জেন্ডার সমতা আনয়নের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সিপিএ সদস্যভূক্ত দেশের সংসদ সদস্যদের ভূমিকা’ শীর্ষক আরেকটি কর্মশালা সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বিষয় সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি বলেন, কর্মশালায় দু’টি সুপারিশ গৃহীত হয়েছে। এগুলো হলো-অর্থপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে জনসংখ্যার ভিত্তিতে নারীদের বিষয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি সিপিএভুক্ত সদস্য দেশসমূহকে নিশ্চিত করতে হবে। কারণ তারা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) নিয়ে কাজ করে এবং সিপিএ কর্তৃক স্বীকৃতি প্রদানের মাধ্যমে নারী সংসদীয় দলকে ক্ষমতায়িত করার মাধ্যমে জেন্ডার সংবেদনশীল বিল প্রণয়ন এবং জেন্ডার টেকসই বার্ষিক প্রতিবেদন প্রস্তুত করে সংসদে উপস্থাপন করতে হবে। তিনি বলেন, ‘বিশ্বেও অর্ধেকের বেশী নারী হলেও তারা নানাভাবে বঞ্চিত। এদের সমতা আনা বিশেষ জরুরি। কেননা, অর্ধেক অংশ বাদ দিয়ে কোন ভাবেই উন্নয়ন সম্ভভ নয়। সে কারণে সমাজে বঞ্চিত, অবহেলিত, দরিদ্র নারীদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, উন্নয়ন ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার জন্য সিপিএ সদস্যদেশগুলো সংসদে আরো বেশি করে প্রকল্প গ্রহণ করা, নারীদের রাজনীতি ও সংসদে আসার জন্য অনুপ্রেবণা সৃষ্টি ও পরিবেশ নিশ্চিত করা, সংসদসহ দেশের বিভিন্ন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোতে নারীদের জন্য অধিক অর্থ বরাদ্দ ও নারী বান্ধব বাজেট প্রণয়ন, আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে নারীদের আরো বেশী অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার সুপারিশ এসেছে। মালয়েশিয়ার এমপি ও কমনওয়েলথ ওমেন পার্লামেন্টারীয়ানদের (সিডাব্লিউপি) চেয়ারপার্সন ড. নোরায়নী বলেন, নারীরা জম্মগতভাবেই বঞ্চিত হয়ে আসে। অথচ বিশ্বের অর্ধেকের বেশি নারী। কিন্তু তারা বিভিন্নভাবে বঞ্চিত। এদের উন্নয়ন ছাড়া বিশ্বের উন্নয়ন অবাস্তব। নারীদের যদি সমান মর্যাদা ও কর্মক্ষেত্রে উপযুক্ত সুযোগ সৃষ্টি হয়, তাহলে জিডিপি ১ শতাংশ বেড়ে যাবে। এ ছাড়া সিপিএ চেয়ারপার্সন ও জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ইয়ুথ পার্লামেন্ট-এর কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে রাজনীতি ও আইন সভা বা সংসদে নারী ও যুবাদের আরো বেশী অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। যেহেতু কমনওয়েলথ ভুক্ত দেশগুলোর প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ ৩০ বছরের নিচে। তাই তাদেরকে অধিক সংখ্যায় আইন প্রণয়ন ও নীতি নির্ধারনে ভূমিকা রাখার সুযোগ দেয়ার বিষয়ে সুপারিশ এসেছে ইয়ুথ পার্লামেন্ট বিষয়ক কর্মশালায়। খবরঃ বাসস।