জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া চার মাসের জামিন আপিল বিভাগে স্থগিত হওয়ার বিষয়ে আজ শুনানি শেষ হয়েছে। একই সঙ্গে জামিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা লিভ টু আপিল (আপিলের জন্য অনুমতি চেয়ে আবেদন) নিয়েও শুনানি শেষ করেছে আপিল বিভাগ। কাল সোমবার এ বিষয়ে আদেশ দেওয়া হবে।
আজ প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ৯ ও ১০ নম্বরে এ দুটি বিষয়ের ওপর শুনানি ছিল।
সকালে প্রথমে জামিনের বিপক্ষে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের লিভ টু আপিল বিষয়ে শুনানি হয়। খানিক বিরতি দিয়ে জামিনের স্থগিতাদেশ বিষয়ে শুনানি হয়। পরে আদালত এ বিষয়ে কাল আদেশ দেওয়ার কথা জানান।
গত ১২ মার্চ খালেদা জিয়াকে চার মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের দেওয়া চার মাসের জামিন স্থগিত চেয়ে পরের দিন রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদক আবেদন করে। পরে ১৪ মার্চ আপিল বিভাগ আজ পর্যন্ত জামিনের স্থগিতাদেশ দেন। পরদিন ১৫ মার্চ আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জামিনের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল দায়ের করেন।
জামিনের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের জন্য ওই দিন বিকেলেই খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা চেম্বার আদালতে আবেদন করেন। কিন্তু আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ওই আবেদনের শুনানিও রোববার করা হবে মর্মে আদেশ দেন।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ পাঁচ আসামিকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড এবং আসামিদের দুই কোটি ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। রায় ঘোষণার পর পুরান ঢাকার পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারকে বিশেষ কারাগার ঘোষণা দিয়ে খালেদা জিয়াকে সেখানে রাখা হয়।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুদক।
২০১০ সালের ৫ আগস্ট খালেদা জিয়া ও তাঁর ছেলে তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপপরিচালক হারুন-আর রশিদ। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।
মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন—মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।