বিশ্ববিদ্যালয় ও ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত এক নেতাকে জোর করে পরীক্ষায় অংশ নেওয়াতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একাংশ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ এবং জিরো পয়েন্ট এলাকায় সংঘর্ষে পাঁচ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২৮ জন আহত হয়েছেন।
এরপর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চট্টগ্রাম শহরে চলাচলকারী শাটল ট্রেন বন্ধ করে দিয়েছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
প্রায় ছয় মাস আগে শৃঙ্খলাজনিত কারণে যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ও চবি শাখা ছাত্রলীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুল্লাহ আল কায়সার শাকিলকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
ঘটনার বিষয়ে যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিভাগের চতুর্থ বর্ষের প্রথম পরীক্ষা (কোর্স নং-৪০১) আজ সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল।
“শৃঙ্খলাজনিত কারণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এক ছাত্রকে বহিষ্কার করেছিল। তাকে পরীক্ষা দেওয়াতে শতাধিক ছাত্রলীগ নেতাকর্মী সকালে বিভাগে এসে জড়ো হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশের সাথে আলোচনা করে শুরুতে তারা চলে যায়।”
কিছুক্ষণ পর আবার ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা জড়ো হয়ে সেখানে আসে জানিয়ে আবুল কালাম বলেন, “তখন পুলিশের সাথে তাদের ধাক্কাধাক্কি হয়। এরপর পরীক্ষা স্থগিত করতে আমরা বাধ্য হই।
“পরের পরীক্ষাগুলো যথারীতি অনুষ্ঠিত হবে বলে একাডেমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
ঘটনার বিষয়ে চবি ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মিজানুর রহমান বিপুল বলেন, একই ঘটনায় বহিষ্কৃত অন্য ছাত্ররা অন্য বিভাগে ঠিকই পরীক্ষা দিয়েছে।
“শাকিলকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না দেয়ায় তার সহপাঠীরা পরীক্ষা বর্জন করেছে। পুলিশ গিয়ে তাদের বেধড়ক লাঠিপেটা করেছে।”
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে ধাক্কাধাক্কির পর ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে গিয়ে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়ায়।
হাটহাজারী থানার এসআই আলাউদ্দিন বলেন, তারা ইঁট-পাটকেল নিক্ষেপ করায় বাধ্য হয়ে লাঠিচার্জ করতে হয়েছে।
“ইঁটে আঘাতে পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। একজনকে আটক করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে।”
মিজানুর বলেন, “ক্যাম্পাস জুড়ে পুলিশ বেপরোয়া লাঠিচার্জ করেছে। ছাত্রলীগের ২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরাও আহত হয়েছে।
শাকিলের পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা এবং জড়িত পুলিশ সদস্যদের প্রত্যাহার করা না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবরোধের ডাক দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
এদিকে সংঘর্ষের পর বিশ্ববিদ্যালয় রেল স্টেশন এলাকায় রেললাইনের ফিস প্লেট তুলে শাটল ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
চবি শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. মামুন বলেন, “বিভিন্ন সময় বহিষ্কার হওয়া ইসলামী ছাত্র শিবিরের নেতাকর্মীরা পরীক্ষা দিয়েছে। তাহলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কেন পরীক্ষা দিতে পারবে না?”
সংঘর্ষের ঘটনায় আহত পাঁচ পুলিশ সদস্য হলেন- কনস্টেবল রফিকুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, ইমাম হোসেন, শরিফুল ইসলাম ও এএসআই মহসীন আলী।