সাংবিধানিক দায়িত্ব সততা, দক্ষতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে পালনের মাধ্যমে দেশবাসীর প্রত্যাশা পূরণ করতে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন নতুন নির্বাচন কমিশনাররা।
রাষ্ট্রপতি গঠিত নির্বাচন কমিশনে কমিশনারদের মধ্যে সাহিত্যিক, আমলা, সেনা কর্মকর্তা ও বিচারক রয়েছেন। এই প্রথম একজন নারীও বসবেন কমিশনে।
এই কমিশনের প্রধান বা সিইসি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সাবেক সচিব কে এম নূরুল হুদা। তার নেতৃত্বে পাঁচজনের এই কমিশন সোমবারই গঠিত হল।
নতুন কমিশনার মাহবুব তালুকদার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “সাংবিধানিক পদে এটা অত্যন্ত কঠিন দায়িত্ব। নিরপেক্ষতা, সততা, দক্ষতা ও বিবেকবোধ সমুন্নত রেখে দায়িত্ব পালন করব।”
দায়িত্ব নেওয়ার পর সব ‘বুঝে-শুনে’ পরবর্তীতে কথা বলবেন বলে জানান সাবেক এই অতিরিক্ত সচিব, যিনি কথাসাহিত্যিক হিসেবেই বেশি পরিচিত।
শিশু সাহিত্যের জন্য ২০১২ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান মাহবুব তালুকদার। মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব তালুকদারের আটটি উপন্যাস ও ৪০টি গল্পগ্রন্থ রয়েছে। ‘বঙ্গভবনে ৫ বছর’ তার সুপরিচিত গ্রন্থ।
নেত্রকোণায় জন্ম নেওয়া মাহবুব ১৯৭১ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতাও করেছেন, ১৯৭২ সালে বঙ্গভবনে উপ সচিব হিসেবে যোগ দেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি আবু সাইদ চৌধুরী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে মাহবুব তালুকদার, যার নামের সুপারিশটি এসেছিল বিএনপির কাছ থেকে।
নতুন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, “মহামান্য রাষ্ট্রপতি যে আস্থা নিয়ে আমাকে নিয়োগ দিয়েছেন সাংবিধানিক এ দায়িত্ব আমি নিরপেক্ষভাবে পালন করব।
“দেশবাসীর আস্থা যেন আমি রাখতে পারি, সেজন্য সবার দোয়া চাই।”
২০০৮ সালে ইসি সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব ছিলেন রফিকুল। সর্বশেষ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন তিনি।
১১৯৮২ ব্যাচের এ কর্মকর্তা ২০১৩ সালে অবসরে যান।
নতুন ইসিতে একমাত্র সেনা কর্মকর্তা শাহাদৎ হোসেন চৌধুরী বলেন, “অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে সবার সহযোগিতা চাই।
“নির্বাচন কমিশনের এ কাজটি একার নয়, একটা টিমের। মানুষের আস্থা পূরণে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যাশা যেন পূরণ করতে পারি, সেভাবেই কাজ করব।”
নোয়াখালীতে ১৯৫৯ সালে জন্ম শাহাদতের। ১৯৮০ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন তিনি, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে থাকা অবস্থায় ২০১০ সালে অবসরে যান।
নবম সংসদ নির্বাচনের আগে ইসির ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন প্রকল্পের পরিচালকও ছিলেন শাহাদৎ।
স্ত্রী সারোয়াত চৌধুরী ও দুই সন্তান রয়েছে সাবেক এ সেনা কর্মকর্তার। বড় মেয়ে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে, ছেলে পড়ে স্কুলে।
নতুন কমিশনে একমাত্র নারী কবিতা খানম বলেন, “আমি ৩১ বছর বিচারিক দায়িত্ব পালন করেছি, আমার অভিজ্ঞতা কাজে লাগাব। সাংবিধানিক এ দায়িত্ব পালনে সংবিধান ও আইনকে সমুন্নত রেখেই কাজ করব।”
নির্বাচন কমিশনের ইতিহাসে প্রথম নারী হিসেবে নিয়োগ পেয়ে উচ্ছ্বসিত কবিতা খানম।
“এটাই প্রথম, এটা ইতিহাস। এর অংশ হতে পেরে খুব ভালো লাগছে।”
২০১৩ সালে অবসরে যাওয়া জেলা জজ কবিতার নামটি সার্চ কমিটিতে প্রস্তাব করেছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
নওগাঁয় বাড়ি কবিতা খানমের। তার স্বামীও বিচারক ছিলেন, তিনি ২০১১ সালে মারা যান।